কুমু বললে, “সেইটেই তো আমার আশ্চর্য ঠেকে।”
“বল কী, তোমাকে ভালোবাসা আশ্চর্য! কেন? উনি কি পাথরের?”
“আমি ওঁর যোগ্য না।”
“তুমি যার যোগ্য নও সে-পুরুষ কোথায় আছে?”
“ওঁর কতবড়ো শক্তি, কত সম্মান, কত পাকা বুদ্ধি, উনি কত মস্ত মানুষ। আমার মধ্যে উনি কতটুকু পেতে পারেন? আমি যে কী অসম্ভব কাঁচা তা এখানে এসে দুদিনে বুঝতে পেরেছি। সেইজন্যেই যখন উনি ভালোবাসেন তখনই আমার সবচেয়ে বেশি ভয় করে। আমি নিজের মধ্যে যে কিছুই খুঁজে পাই নে। এতবড়ো ফাঁকি নিয়ে আমি ওঁর সেবা করব কী করে? কাল রাত্তিরে বসে বসে মনে হল আমি যেন বেয়ারিং লেফাফা, আমাকে দাম দিয়ে নিতে হয়েছে, খুলে ফেললেই ধরা পড়বে যে ভিতরে চিঠিও নেই।”
“দিদি, হাসালে। বডঠাকুরের মস্তবড়ো কারবার, কারবারি বুদ্ধিতে ওঁর সমান কেউ নেই সব জানি। কিন্তু তুমি কি ওঁর কারবারের ম্যানেজারি করতে এসেছ যে, যোগ্যতা নেই বলে ভয় পাবে? বড়ঠাকুর যদি মনের কথা খোলসা করে বলেন তবে নিশ্চয় বলবেন তিনিও তোমার যোগ্য নন।’
“সে-কথা তিনি আমাকে বলেছিলেন।
“বিশ্বাস হয় নি?
“না। উলটে আমায় ভয় হয়েছিল। মনে হয়েছিল আমার সম্বন্ধে ভুল করলেন, সে-ভুল ধরা পড়বে।”
“কেন তোমার এমন মনে হল বলো দেখি?”
“বলব? এই-যে আমার হঠাৎ বিয়ে হয়ে গেল, এ তো সমস্ত আমি নিজে ঘটিয়ে তুললুম। কিন্তু কী অদ্ভুত মোহে, কী ছেলেমানুষি করে?