পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অচলিত) দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৫৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনুবাদ-চর্চা । ৫২৩ সম্বল সেতুটির উপর দিয়া আমরা নদী পার হইলাম এবং ঘোড়ায় চড়িয়া তীর বাহিয়া আশামের দিকে চলিলাম ও সেইখানেই আমরা নৌকায় চড়িলাম । এখানে স্রোত প্রখর, এবং আমরা অনায়াসেই ভাসিতে ভাসিতে সন্ধ্যা নাগাইদ বন্যারে আসিলাম । উলার সরোবর পার হওয়া সে এক ব্যাপার ; কারণ কাশ্মীরী-মাল্লারা অনেক প্রকারের ভয়ে ও অন্ধ-সংস্কারে পূর্ণ। ঝড়ের ভয়ে তাহারা মধ্যাহ্নে ও অন্ধকারের ভয়ে সন্ধ্যার সময়ে পার হইবে না ; একমাত্র ভোরে নির্বাত সময়ে যাইতে সম্মত হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টায় পার হইয়া আমরা কুইনকুশে আসিলাম, ইহা হরিমঞ্জের ছায়াতলে সরোবর-তীরবত্তী একটি ক্ষুদ্র গ্রাম ; এই হরিমঞ্চ পৰ্ব্বতটি সরোবরের পাশ্বদেশ হইতে খাড়া উঠিয়াছে এবং উহার শীর্ষদেশে কোনো ফকিরের মন্দির মুকুটের ন্যায় বিরাজ করিতেছে । > 。 গত মাস আমার পক্ষে যেমন দুঃখদায়ক হইয়াছিল, এমন আর কোনো কালে হয় নাই। বস্তুত কাতর হওয়া যে কাহাকে বলে, ইহার পূৰ্ব্বে কখনো জানিতাম না । জানুয়ারির গোড়ার দিকে ইংলণ্ড হইতে পত্ৰযোগে আমার কনিষ্ঠ ভগিনীর মৃত্যুসংবাদ আসে। সে যে আমার কী ছিল, তাহা কোনো বাক্য প্রকাশ করিতে পারে না । আমি এ কথা বলিব না যে, জগতের যে কোনো পদার্থের চেয়ে সে আমার প্রিয় ছিল ; কারণ যে ভগিনী আমার সঙ্গে ছিল, সে তাহার সমতুল্য প্রিয় ; কিন্তু এক মানুষ আর এক মানুষের যত প্রিয় হইতে পারে, সে আমার তাহাই ছিল । এমন কি মহাকাল যদিও বেদন মোচনের কার্য্য আরম্ভ করিয়াছে, তথাপি এখনো তাহার কথা বলিতে গেলে, একেবারে অপুরুষোচিতভাবে বিচলিত না হইয়া থাকিতে পারি না। আমি যে এই আঘাতের ব্যথায় সম্পূর্ণ তলাইয়া যাই নাই, সে জন্য প্রধানত সাহিত্যের কাছে আমি ঋণী । 3. o পৰ্ব্বতের চূড়া, সমুদ্র এবং মেরুপ্রদেশীয় তুষারক্ষেত্রের উপরিভাগের বায়ুমণ্ডল সৰ্ব্বত্রই ধূলিভারাক্রান্ত । অণুবীক্ষণ যন্ত্রে প্রকাশ পায় যে, পুষ্পের পরাগ, উদ্ভিদতস্তুর অংশ, লোম, ধাতু ও প্রস্তরের কণা, জীবাণু ও রোগবীজের দ্বারা বায়ুমণ্ডলস্থ ধূলিরাশি গঠিত। বাতাসের ধূলিকণা সকল ছায়াশূন্ত স্থানে আলোক প্রতিফলিত করে ;