পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९२br * রবীন্দ্র-রচনাবলী দেখিয়া ) ও মা, এ যে সেই ললিতবাবু। আর তো পালাবার পথ নেই ! ( সামলাইয়া লইয়া ধীরে ধীরে চাপকান-শামলা খুলিয়া নিমাইয়ের প্রতি ) তোমার বাবুর এই শামলা, আর এই চাপকান । সাবধান করে রেখো, হারিয়ো না। আর শিগগির দেখে এস দেখি বাগবাজারের চৌধুরীবাবুদের বাড়ি থেকে পালকি এসেছে কিনা । নিমাই । ( ঈষৎ হাসিয়া ) যে আজ্ঞা । [প্রস্থান ইন্দুমতী । ছি ছি! লজ্জায় ললিতবাবুকে ভালো করে দেখে নিতেও পারলুম না ! আজি কী করলুম ! ললিতবাবু কী মনে করলেন । যা হোক, আমাকে তো চেনেন না । ভাগ্যিস হঠাৎ বুদ্ধি জোগাল, বাগবাজারের চৌধুরীদের নাম করে দিলুম। চন্দ্রবাবুর এ বাসাটিও হয়েছে তেমনি। অন্দর বাহির সব এক। এখন আমি কোন দিক দিয়ে পালাই ! ওই আবার আসছে। মানুষটি তো ভালো নয়! অন্য কোনো লোক হলে অবস্থা বুঝে চলে যেত ! ও আবার ছল করে যে ফিরে আসে । কেন বাপু, দেখবার জিনিস কী এমন আছে ? নিমাইয়ের প্রবেশ ^ নিমাই । ঠাকরুন, পালকি তো আসেনি। এখন কী আজ্ঞা করেন । ইন্দুমতী। এখন তুমি তোমার কাজে যেতে পার । না না, ওই যে তোমার মনিব এদিকে আসছেন । ওঁকে আমার সম্বন্ধে খবর দেবার কোনো দরকার নেই, আমার পালকি নিশ্চয় এসেছে । [ প্রস্থান নিমাই । কী চমৎকার রূপ ! আর কী উপস্থিত বৃদ্ধি ! চোখে মুখে কেমন উজ্জল জীবন্ত ভাব । বা, বা ! আমাকে হঠাৎ চাকর বানিয়ে দিয়ে গেল— সেও আমার পরম ভাগ্যি ! বাঙালির ছেলে চাকরি করতেই জন্মেছি কিন্তু এমন মনিব কি অদৃষ্টে জুটবে । পুরুষের কাপড়ও যেমন মানিয়েছিল ওইটুকু নির্লজ্জতাও ওকে কেমন বেশ শোভা পেয়েছিল । আহা, এই শামলা আর এই চাপকগন চন্দরকে ফিরিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে না । বাগবাজারের চৌধুরী ! সন্ধান নিতে হচ্ছে । চন্দ্রকাস্তুের প্রবেশ চন্দ্রকান্ত । তুমি এ ঘরে ছিলে না কি । তবে তো দেখেছ ? নিমাই । চক্ষু থাকলেই দেখতে হয়—কিন্তু কে বলো দেখি ? চঞ্জকান্ত । বাগবাজারের চৌধুরীদের মেয়ে কাদম্বিনী । আমার স্ত্রীর একটি বন্ধু। *