পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গোড়ায় গলদ ২৭৭ আর সহ হল না। রাগ করে ঘর ছেড়ে শুনলুম তোদের এই বাড়িতে এসে রয়েছেন । তা ভাই, বিয়ে করেছি বলেই কি বাপ-মা একেবারে পর হয়ে গেছে । দু-দিন সেখানে থাকতে পাব না ! যা হোক, খবরটা পেয়ে চলে আসতে হল । ইন্দুমতী। আবার তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে বুঝি ! ক্ষান্তমণি। তা ভাই, একলা তো আর ঘরকন্না হয় না । ওদের যে চাই, ওদের যে নইলে নয়। নইলে আমার কি সাধ ওদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখি । ইন্দুমতী । তোমার কর্তাটিকে দেখবে তো এসো, ওই ঘর থেকে দেখা যাবে। চতুর্থ দৃশ্য ঘর শিবচরণ, নিমাই, নিবারণ ও চন্দ্রকান্ত চন্দ্রকাস্ত । সমস্ত ঠিক হয়ে গেছে । শিবচরণ। কী হল বলে দেখি । চন্দ্রকান্ত । ললিতের সঙ্গে কাদম্বিনীর বিবাহ স্থির হয়ে গেল । নিবারণ। সে কী ! সে যে বিবাহ করবে না শুনলুম ? চন্দ্রকান্ত । সে তো স্ত্রীকে বিবাহ করছে না । তার টাকা বিয়ে করে টাকাটি সঙ্গে নিয়ে বিলেত যাবে। যা হোক, এখন আর-একবার আমাদের নিমাইবাবুর মত নেওয়া উচিত—ইতিমধ্যে যদি আবার বদল হয়ে থাকে। শিবচরণ । ( ব্যস্তভাবে ) না না, আর মত বদলাতে সময় দেওয়া হবে না। তার পূর্বেই আমরা পাচ জনে পড়ে কোনো গতিকে ওর বিয়েটা দিয়ে দিতে হচ্ছে । চলে৷ নিমাই অনেক আয়োজন করবার আছে । ( নিবারণের প্রতি ) তবে চললেম ভাই । নিবারণ । এসো । [ নিমাই ও শিবচরণের প্রস্থান চন্দরবাবু, আপনার তো খাওয়া হল না, কেবল ঘুরে ঘুরেই অস্থির হলেন—একটু বস্কন, আপনার জন্তে জলখাবারের আয়োজন করে আসিগে । [ প্রস্থান ক্ষান্তমণির প্রবেশ ক্ষাস্তমণি। এখন বাড়ি যেতে হবে ? না কী । চন্দ্রকাস্ত । ( দেওয়ালের দিকে মুখ করিয়া ) নাঃ, আমি এখানে বেশ আছি । ক্ষান্তমণি । তা তো দেখতে পাচ্ছি। তা চিরকাল এইখানেই কাটাবে না কি । চন্দ্রকান্ত । বিস্তুর সঙ্গে আমার তো সেইরকমই কথা হয়েছে।