পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী হবুপুর রাজ্যে আজ দিন ছয়-সাত । চোখে কারো নিদ্রা নাই, পেটে নাই ভাত । শীর্ণ গালে হাত দিয়ে নত করি শির রাজ্যস্থদ্ধ বালবৃদ্ধ ভেবেই অস্থির । ছেলেরা ভুলেছে খেলা, পণ্ডিতেরা পাঠ, মেয়েরা করেছে চুপ—এতই বিভ্ৰাট । সারি সারি বসে গেছে কথা নাহি মুখে, চিন্তা যত ভারি হয় মাথা পড়ে ঝুকে । ভু ইফোড়া তত্ত্ব যেন ভূমিতলে খোজে, সবে যেন বসে গেছে নিরাকার ভোজে । মাঝে মাঝে দীর্ঘশ্বাস ছাড়িয়া উৎকট হঠাৎ ফুকারি উঠে—“হিং টিং ছট্‌ ৷” স্বপ্নমঙ্গলের কথা অমৃতসমান , গোঁড়ানন্দ কবি ভনে, শুনে পুণ্যবান । চারিদিক হতে এল পণ্ডিতের দল,— অযোদ্ধা কনোজ কাঞ্চী মগধ কোশল । উজ্জয়িনী হতে এল বুধ-অবতংস— কালিদাস কবীন্দ্রের ভাগিনেয়বংশ । । মোটা মোটা পুথি লয়ে উলটায় পাতা, ঘন ঘন নাড়ে বসি টিকিমৃদ্ধ মাথা । বড়ো বড়ো মস্তকের পাকা শস্তখেত বাতাসে জুলিছে যেন শীর্ষ-সমেত । কেহ শ্রুতি, কেহ স্মৃতি, কেহবা পুরাণ, কেহ ব্যাকরণ দেখে, কেহ অভিধান । কোনোখানে নাহি পায় অর্থ কোনোরূপ, বেড়ে উঠে অনুস্বর-বিসর্গের স্ত,প । চুপ করে বসে থাকে বিষম সংকট, থেকে থেকে হেঁকে ওঠে —“হিং টিং ছটু ।”