পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

84ఆ ब्रवैौडय-ब्रहनांवलौ ঘর হইতে সে বাহির হইতেই রাজলক্ষ্মী বিরক্তির স্বরে জিজ্ঞাসা করিলেন, "কী, ट्झेल की ।” আশা কহিল, “তিনি এখন পড়িতেছেন, নিচেই শুইবেন।” বলিয়া সে নিজের অপমানিত শয়নগৃহে আসিয়া প্রবেশ করিল। কোথাও তাহার মুখ নাই— সমস্ত পৃথিবী সর্বত্রই যেন মধ্যাহের মরু-ভূতলের মতো তপ্ত হইয়া উঠিয়াছে। খানিক রাত্রে আশার শয়নগৃহের রুদ্ধদ্বারে ঘা পড়িল, “বউ, বউ, দরজা খোলো ।” আশা তাড়াতাড়ি দ্বার খুলিয়া দিল। রাজলক্ষ্মী তাহার হাপানি লইয়া সিড়িতে উঠিয়া কষ্টে নিশ্বাস লইতেছিলেন। ঘরে প্রবেশ করিয়াই তিনি বিছানায় বসিয়া পড়িলেন ও বাকশক্তি ফিরিয়া আসিতেই ভাঙা গলায় কহিলেন, “বউ, তোমার রকম কী। উপরে আসিয়া দ্বার বন্ধ করিয়াছ যে । এখন কি এই রকম রাগারগি করিবার সময় ! এত দুঃখেও তোমার ঘটে বুদ্ধি আসিল না। যাও, নিচে যাও।” আশা মৃদুস্বরে কহিল, “তিনি একলা থাকিবেন বলিয়াছেন।” রাজলক্ষ্মী। একলা থাকিবে বলিলেই হইল। রাগের মুখে সে কী কথা বলিয়াছে, তাই শুনিয়া অমনি বাকিয়া বসিতে হইবে । এত অভিমানী হইলে চলে না। যাও, শীঘ্র ষাও । দুঃখের দিনে বধুর কাছে শাশুড়ীর আর লজ্জা নাই। র্তাহার হাতে ষে-কিছু উপায় আছে, তাহাই দিয়া মহেন্দ্রকে কোনোমতে বাধিতেই হইবে । আবেগের সহিত কথা কহিতে কহিতে রাজলক্ষ্মীর পুনরায় অত্যন্ত শ্বাসকষ্ট হইল । কতকটা সংবরণ করিয়া তিনি উঠিলেন। আশাও দ্বিরুক্তি না করিয়া তাহাকে ধরিয়া লইয়া নিচে চলিল। রাজলক্ষ্মীকে আশা তাহার শয়নঘরে বিছানায় বসাইয়া, তাকিয়াবালিশগুলি পিঠের কাছে ঠিক করিয়া দিতে লাগিল। রাজলক্ষ্মী কহিলেন, “থাক্‌ বউমা, থাক। স্থধোকে ডাকিয়া দাও । তুমি যাও, আর দেরি করিয়ো না।” আশা এবার আর দ্বিধামাত্র করিল না । শাশুড়ীর ঘর হইতে বাহির হইয়া একেবারে মহেঞ্জের ঘরে গিয়া উপস্থিত হইল। মহেঞ্জের সম্মুখে টেবিলের উপর খোলা বই পড়িয়া আছে– সে টেবিলের উপর দুই পা তুলিয়া দিয়া চৌকির উপর মাথা রাখিয়া একমনে কী ভাবিতেছিল। পশ্চাতে পদশব্দ শুনিয়া একেবারে চমকিয়া উঠিয় ফিরিয়৷ তাকাইল । যেন কাহার ধ্যানে নিমগ্ন ছিল, হঠাৎ ভ্রম হইয়াছিল, সে-ই বুঝি আসিয়াছে। আশাকে দেখিয়া মহেক্স সংযত হইয়া পা নামাইয়া খোলা বইটা কোলে টানিয়া লইল । মহেন্দ্র আজ মনে মনে আশ্চর্য হইল। আজকাল তো আশা এমন অসংকোচে