পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

यांकृऑडि Wą, tఫిలి বড়ো করিয়া জানায় নাই— সকল কথাতেই, সকল কাজেই, সকল সম্পর্কেই, কেবল কল্যাণ, কেবল পুণ্য এবং ধর্মের মন্ত্র কানে দিয়াছে। সেই সমাজকেই আমাদের সর্বোচ্চ আশ্রয় বলিয়া তাহার প্রতিই আমাদের বিশেষ করিয়া দৃষ্টিক্ষেপ করা उपायधुक । কেহ কেহ বলিবেন, সমাজ তো আছেই, সে তো আমাদের পূর্বপুরুষ গড়িয়া রাখিয়াছেন, আমাদের কিছুই করিবার নাই । এইখানেই আমাদের অধঃপতন হইয়াছে। এইখানেই বর্তমান যুরোপীয় সভ্যতা বর্তমান হিন্দুসভ্যতাকে জিতিয়াছে । যুরোপের নেশন একটি সজীব সত্তা । অতীতের সহিত নেশনের বর্তমানের ষে কেবল জড় সম্বন্ধ, তাহা নহে– পূর্বপুরুষ প্রাণপাত করিয়া কাজ করিয়াছে এবং বর্তমান পুরুষ চোখ বুজিয়া ফলভোগ করিতেছে, তাহা নহে। অতীত-বর্তমানের মধ্যে নিরস্তর চিত্তের সম্বন্ধ আছে— অখণ্ড কর্মপ্রবাহ চলিয়া আসিতেছে । এক অংশ প্রবাহিত, আর-এক অংশ বদ্ধ, এক অংশ প্ৰজলিত, অপরাংশ নির্বাপিত, এরূপ নহে । সে হইলে তো সম্বন্ধবিচ্ছেদ হইয়া গেল— জীবনের সহিত মৃত্যুর কী সম্পর্ক । কেবলমাত্র অলস ভক্তিতে যোগসাধন করে না— বরং তাহাতে দূরে লইয়া যায় । ইংরেজ যাহা পরে, যাহা খায়, যাহা বলে, যাহা করে, সবই ভালো, এই ভক্তিতে আমাদিগকে অন্ধ অমুকরণে প্রবৃত্ত করে— তাহাতে আসল ইংরেজত্ব হইতে আমাদিগকে দূরে লইয়া যায়। কারণ ইংরেজ এরূপ নিরুদ্যম অনুকরণকারী নহে। ইংরেজ স্বাধীন চিন্তা ও চেষ্টার জোরেই বড়ো হইয়াছে— পরের গড়া জিনিস অলসভাবে ভোগ করিয়া তাহারা ইংরেজ হইয়া উঠে নাই। সুতরাং ইংরেজ সাজিতে গেলেই প্রকৃত ইংরেজত্ব আমাদের পক্ষে দুর্লভ হইবে । তেমনি আমাদের পিতামহেরা যে বড়ো হইয়াছিলেন সে কেবল আমাদের প্রপিতামহদের কোলের উপরে নিশ্চলভাবে শয়ন করিয়া নহে। তাহারা ধ্যান করিয়াছেন, বিচার করিয়াছেন, পরীক্ষা করিয়াছেন, পরিবর্তন করিয়াছেন, তাহীদের চিত্তবৃত্তি সচেষ্ট ছিল, সেইজন্যই তাহারা বড়ো হইতে পারিয়াছেন । আমাদের চিত্ত যদি উহাদের সেই চিত্তের সহিত যোগযুক্ত না হয়, কেবল তাহাদের কৃতকর্মের সহিত আমাদের জড় সম্বন্ধ থাকে, তবে আমাদের আর ঐক্য নাই । পিতামাতার সহিত পুত্রের জীবনের যোগ আছে– তাহদের মৃত্যু হইলেও জীবনক্রিয়া পুত্রের দেহে একই রকমে কাজ করে। কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষের মানসী শক্তি ষেভাবে কাজ করিয়াছে,