পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সোনার তরী দেখে নাই তারে ; এত বেলা হয়ে যায় নাই স্নানাহার। এতক্ষণ ছায়াপ্রায় ফিরিতেছিল সে মোর কাছে কাছে ঘেঁষে, চাহিয়া দেখিতেছিল মৌন নিনিমেষে বিদায়ের আয়োজন । শ্রাস্তদেহে এবে বাহিরের দ্বারপ্রাস্তে কী জানি কী ভেবে চুপিচাপি বসে ছিল । কহিমু যখন “মাগো, আসি”, সে কহিল বিষগ্ন-নয়ন মানমুখে, “যেতে আমি দিব না তোমায়” । যেখানে আছিল বসে রহিল সেথায়, ধরিল না বাহু মোর, রুধিল না দ্বার, শুধু নিজ হৃদয়ের স্নেহ-অধিকার । প্রচারিল—“যেতে আমি দিব না তোমায়” । তবুও সময় হল শেষ, তবু হায় যেতে দিতে হল । ওরে মোর মূঢ় মেয়ে, কে রে তুই, কোথা হতে কী শকতি পেয়ে কহিলি এমন কথা, এত স্পধাভরে— “যেতে আমি দিব না তোমায়” । চরাচরে কাহারে রাখিবি ধরে দুটি ছোটো হাতে গরবিনী, সংগ্রাম করিবি কার সাথে বসি গৃহদ্বারপ্রাস্তে শ্রাস্ত-ক্ষুদ্র-দেহ শুধু লয়ে ওইটুকু বুকভরা স্নেহ । ব্যথিত হৃদয় হতে বহু ভয়ে লাজে মর্মের প্রার্থনা শুধু ব্যক্ত করা সাজে এ জগতে,— শুধু বলে রাখা “যেতে দিতে ইচ্ছা নাহি । হেন কথা কে পারে বলিতে “যেতে নাহি দিব” । শুনি তোর শিশুমুখে স্নেহের প্রবল গর্ববাণী, সকৌতুকে es