পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সোনার তরী তাই আজি শুনিতেছি তরুর মর্মরে এত ব্যাকুলতা ; অলস ঔদাস্তভরে মধ্যাহ্নের তপ্ত বায়ু মিছে খেলা করে শুষ্ক পত্র লয়ে ; বেলা ধীরে যায় চলে ছায় দীর্ঘতর করি অশখের তলে । মেঠো সুরে কাদে যেন অনন্তের বঁাশি বিশ্বের প্রান্তরমাঝে ; শুনিয়া উদাসী । বস্কন্ধরা বসিয়া আছেন এলোচুলে দূরব্যাপী শস্তক্ষেত্রে জাহ্নবীর কুলে একখানি রৌদ্রপীত হিরণ্য-অঞ্চল বক্ষে টানি দিয়া ; স্থির নয়নযুগল দূর নীলাম্বরে মগ্ন ; মুখে নাহি বাণী । দেখিলাম তার সেই মান মুখখানি সেই দ্বারপ্রান্তে-লীন স্তন্ধ মর্মাহত মোর চারি বৎসরের কস্তাটির মতো । ১৪ কাতিক, ১২৯৯ সমুদ্রের প্রতি পুরীতে সমূদ্র দেখিয়। হে আদিজননী সিন্ধু, বস্থঙ্করা সস্তান তোমার, একমাত্র কন্যা তব কোলে । তাই তন্দ্রা নাহি আর চক্ষে তব, তাই বক্ষ জুড়ি সদা শঙ্কা, সদা আশা, সদা আন্দোলন ; তাই উঠে বেদমন্ত্রসম ভাষা নিরস্তর প্রশাস্ত অম্বরে, মহেন্দ্রমন্দির পানে অস্তরের অনন্ত প্রার্থনা, নিয়ত মঙ্গলগানে ধ্বনিত করিয়া দিশি দিশি ; তাই ঘুমন্ত পৃথ্বীরে অসংখ্য চুম্বন কর আলিঙ্গনে সর্ব অঙ্গ ঘিরে