পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*覇ぐ。5獲 8》 লোভ অল্প । যেটুকু তাহার দরকার সেটুকু তিনি হিসাব করিয়া চলিতেন ; তার চেয়ে বেশি বা তাহা তিনি বুঝিতেনও না, তাহাতে হাতও দিতেন না। আমার বিবাহের পূর্বেই আমার শ্বশুর মারা গিয়াছিলেন এবং আমার বিবাহের অল্পদিন পরেই শাশুড়ির মৃত্যু হয়। সংসারে আমাদের মাথার উপরে কেহই ছিল না। আমার স্বামী মাথার উপরে একজন উপর ওয়tলাকে না বসাইয়া থাকিতে পারিতেন না। এমন-কি, বলিতে লজ্জা হয়, আমাকে যেন তিনি ভক্তি করিতেন । তবু আমার বিশ্বাস, তিনি আমার চেয়ে বুঝিতেন বেশি, আমি তাহার চেয়ে বলিতাম বেশি। তিনি সকলের চেয়ে ভক্তি করিতেন তাহার গুরুঠাকুরকে । শুধু ভক্তি নয়, সে ভালোবাসা—এমন ভালোবাসা দেখা যায় না। গুরুঠাকুর তার চেয়ে বয়সে কিছু কম। কী স্বন্দর রূপ র্তার। বলিতে বলিতে বোষ্টমী ক্ষণকাল থামিয়া তাহার সেই দুরবিহারী চক্ষু দুটিকে বহু দূরে পাঠাইয়। দিল এবং গুনগুন করিয়া গাহিল— অরুণকিরণখানি তরুণ অমৃতে ছানি কোন বিধি নিরমিল দেহা । এই গুরুঠাকুরের সঙ্গে বালককাল হইতে তিনি খেলা করিয়াছেন ; তখন হইতেই তাহাকে আপন মনপ্রাণ সমর্পণ করিয়া দিয়াছেন । তখন আমার স্বামীকে ঠাকুর বোকা বলিয়াই জানিতেন। সেইজন্য র্তাহার উপর বিস্তর উপদ্রব করিয়াছেন । অন্ত সঙ্গীদের সঙ্গে মিলিয়া পরিহাস করিয়া তাহাকে যে কত নাকাল করিয়াছেন তাহার সীমা নাই । বিবাহ করিয়া এ সংসারে যখন আসিয়াছি তখন গুরুঠাকুরকে দেখি নাই । তিনি তখন কাশীতে অধ্যয়ন করিতে গিয়াছেন । আমার স্বামীই তাহাকে সেখানকার খরচ জোগাইতেন । গুরুঠাকুর যখন দেশে ফিরিলেন তখন আমার বয়স বোধ করি আঠারো হইবে । পনেরো বছর বয়সে আমার একটি ছেলে হুইয়াছিল। বয়স কাচা ছিল বলিয়াই আমার সেই ছেলেটিকে আমি যত্ন করিতে শিখি নাই, পাড়ার সই-সাঙাতিদের সঙ্গে মিলিবার জন্যই তখন আমার মন ছুটিত । ছেলের জন্ত ঘরে বাধা থাকিতে হয় বলিয়া এক-একসময় তাহার উপরে আমার রাগ হইত। হায় রে, ছেলে যখন আসিয়া পৌছিয়াছে, মা তখনো পিছাইয়া পড়িয়া আছে, এমন