পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Qፃ8 রবীন্দ্র-রচনাবলী সকল মানুষকেই রাজার, সমাজের, পরিবারের, মলিবের দাসত্ব করিতে হইতেছে। কেমন গোলমালে দায়ে পড়িয়া এইরকমটা ঘটিয়াছে। এইজন্যই লীলা কথাটাকে আমরা চাপা দিতে চাই। আমরা বুক ফুলাইয়া বলি, জিন-লাগাম পরিয়া ছুটিতে ছুটিতে রাস্তায় মুখ থুবড়াইয়া মরাই মানুষের পরম গৌরব। এ-সমস্ত দাসের জাতির দাসত্বের বড়াই। এমনি করিয়া দাসত্বের মন্ত্র আমাদের কানে আওড়ানো হয় পাছে এক মুহূর্তের জন্য আমাদের আত্মা আত্মগৌরবে সচেতন হইয়া উঠে । না, আমরা স্তাকৃরা গাড়ির ঘোড়ার মতো লাগাম-বাধা মরিবার জন্য জন্মাই নাই। আমরা রাজার মতো বাচিব, রাজার মতো মরিব । আমাদের সব-চেয়ে বড়ো প্রার্থনা এই যে, আবিরাবীর্ম এধি। হে আবি, তুমি আমার মধ্যে প্রকাশিত হও । তুমি পরিপূর্ণ, তুমি আনন্দ । তোমার রূপই আনন্দ রূপ। সেই আনন্দরূপ গাছের চ্যাল কাঠ নহে, তাহা গাছ । তার মধ্যে হওয়া এবং করা ७कहे । আমার কথার জবাবে এ কথা বলা চলে যে, আনন্দরূপ মানুষের মধ্যে একবার ভাঙচুরের মধ্যে দিয়া তৰে আবার আপনার অর্থও পরিপূর্ণতা লাভ করিতে পারিবে । যতদিন তা না হয় ততদিন লড়াইয়ের মন্ত্র দিনরাত জপিতে হইবে ; ততদিন লাগাম পরিয়া মুখ থুবড়িয়া মরিতে হইবে । ততদিন ইস্কুলে আপিলে আদালতে হাটে বাজারে কেবলই নরমেধযজ্ঞ চলিতে থাকিবে । সেই বলির পশুদের কানে বলিদানের ঢাকঢোলই খুব উচ্চৈঃস্বরে বাজাইয় তাহাদের বুদ্ধিকে ঘুলাইয়া দেওয়া ভালো— বলা ভালো, এই হাড়কাঠই পরম দেবতা, এই খড়গাঘাতই আশীৰ্বাদ, আর জল্পাদই আমাদের ত্ৰাণকতর্ণ । তা হোক, বলিদানের ঢাক-ঢোল বাজুক আপিলে, বাজুক আদালতে, বাজুক বন্দীদের শিকলের ঝংকারের সঙ্গে তাল রাখিয়া। মরুক সকলে গলদঘর্ম হইয়া, শুষ্কতালু লইয়া, লাগাম কামড়াইয়া রাস্তার ধুলার উপরে। কিন্তু, কবির বীণায় বরাবর বাজিবে : আনন্দাদ্ধ্যেব খম্বিমানি ভূতানি জায়ন্তে । কবির ছন্দে এই মন্ত্রের উচ্চারণ শেষ হইবে ai : Truth is beauty, beauty trutb , èatûv wtf*f* wtafwv zwvatw লাঠি হাতে তাড়া করিয়া আসিলেও সকল কোলাহলের উপরেও এই স্বর ব্যজিবে— সমুদ্রের সঙ্গে, অরণ্যের সঙ্গে, আকাশের আলোকবীণার সঙ্গে মুর মিলাইয়া বাজিবে : আনন্দং সম্প্রয়স্ত্যভিসংবিশন্তি— বাহা কিছু সমস্তই পরিপূর্ণ আনন্দের দিকেই চলিয়াছে, ধুকিতে ধুকিতে রাস্তার ধুলার উপরে মুখ থুবড়াইয়া মরিবার দিকে নহে। ● ७२२