পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミe○ রবীন্দ্র-রচনাবলী ঠাকুরদা। যদি তোরা তোদের সেই কবির কাছে বিধান নিতিস তাহলে শুনতে পেতিস এই ফাৰ্ত্তন মাসের দিনে ঠাকুরদা প্রভৃতি পুরোনো জিনিসমাত্রই একেবারে বর্জনীয়। আমার নামে গান বেঁধে আজ রাগরাগিণীর অপব্যয় করিস নে, তোরা সরস্বতীর বীণার তারে মরচে ধরিয়ে দিবি যে । দ্বিতীয়। ঠাকুরদা, তুমি তো রাস্তাতেই সভা জমালে, উংসবে যাবে কখন ? চলে আমাদের দক্ষিণ বনে । ঠাকুরদা। ভাই আমার ওই দশা, আমি রাস্তা থেকেই চাখতে চাপতে চলি, তার পরে ভোজটা তো আছেই। আদাবস্তে চ মধ্যে চ | দ্বিতীয় । দেখো দাদা, আজকের দিনে মনে একটা কথা বড়ো লাগছে । ঠাকুরদা। কী বল দেখি । দ্বিতীয়। এবার দেশবিদেশের লোক এসেছে, সবাই বলছে, সবই দেগছি ভালে৷ কিন্তু রাজা দেখি নে কেন ? কাউকে জবাব দিতে পারি নে। আমাদের দেশে ওইটে একটা বড়ো ফাকা রয়ে গেছে । ঠাকুরদা । ফাকী ! আমাদের দেশে রাজা এক জায়গায় দেপা দেয় না বলেই তো সমস্ত রাজ্যটা একেবারে রাজায় ঠাসা হয়ে রয়েছে—তাকে বল ফাক ! সে যে আমাদের সবাইকেই রাজা করে দিয়েছে ! এই যে অন্য রাজাগুলো তারা তো উংসবটাকে দলে মলে ছারখার করে দিলে—তাদের হাতিঘোড়া-লোকলশকরের তাড়ায় দক্ষিণ-হাওয়ার দাক্ষিণ্য আর রইল না, বসন্তর যেন দম আটকাবার জে হয়েছে। কিন্তু আমাদের রাজা নিজে জায়গা জোড়ে না, সবাইকে জায়গা ছেড়ে দেয় । কবিকেশরীর সেই গানটা তো জানিস । গান আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্বে । ( আমরা সবাই রাজ ) আমরা যা খুশি তাই করি তবু তার খুশিতেই চরি, আমরা নই বাধী নই দাসের রাজার ত্রাসের দাসত্বে নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কী স্বত্বে। ( আমরা সবাই রাজ )