পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের কবিতা . ۹یى ›ዊ শেষের কবিতা কলকাতার কলেজে পড়ে যতিশংকর। থাকে কলুটোল প্রেসিডেন্সি কলেজের মেসে। অমিত তাকে প্রায় বাড়িতে নিয়ে আসে, খাওয়ায়, তার সঙ্গে নানা বই পড়ে, নানা অদ্ভূত কথায় তার মনটাকে চমকিয়ে দেয়, মোটরে করে তাকে বেড়িয়ে নিয়ে আসে । তার পর কিছুকাল ষতিশংকর অমিতর কোনো নিশ্চিত খবর পায় না। কখনো শোনে সে নৈনিতালে, কখনো উটকামণ্ডে । একদিন শুনলে অমিতর এক বন্ধু ঠাট্ট করে বলছে, সে আজকাল কেটি মিত্তিরের বাইরেকার রংটা ঘোচাতে উঠে পড়ে লেগেছে । কাজ পেয়েছে মনের মতো, বর্ণাস্তর করা। এতদিন অমিত মূর্তি গড়বার শখ মেটাত কথা দিয়ে আজ পেয়েছে সজীব মাহুৰ। সে মাছটিও একে একে আপন উপরকার রঙিন পাপড়িগুলো খসাতে রাজি, চরমে ফল ধরবে আশা ক’রে । অমিতর বোন লিসি নাকি বলছে যে, কেটিকে একেবারে চেনাই যায় না, অর্থাং তাকে নাকি বড ডে বেশি স্বাভাবিক দেখাচ্ছে । বন্ধুদের সে বলে দিয়েছে তাকে কেতকী বলে ডাকতে ; এটা তার পক্ষে নির্লজ্জত, যে-মেয়ে একদা ফিনক্ষিনে শান্তিপুরে শাড়ি পরত সেই লজ্জাবতীর পক্ষে জামাশেমিজ পরারই মতো । অমিত তাকে নাকি নিভৃতে ডাকে “কেয়া" বলে । এ-কথাও লোকে কানাকানি করছে যে, নৈনিতালের সরোবরে নেীকে ভাসিয়ে কেটি তার হাল ধরেছে আর অমিত তাকে পড়ে শোনাচ্ছে রবি ঠাকুরের “নিরুদ্দেশ যাত্র৷ " কিন্তু লোকে কী না বলে। ষতিশংকর বুঝে নিলে অমিতর মনটা পাল তুলে চলে গেছে ছুটিতত্বের মাঝদরিয়ায়। অবশেষে অমিত ফিরে এল । শহরে রাষ্ট্র কেতকীর সঙ্গে তার বিয়ে । অথচ অমিতরনিজ মুখে একদিনও যতী এ প্রসঙ্গ শোনে নি। অমিতর ব্যবহারেরও অনেকখানি বদল ঘটেছে। পূর্বের মতোই যতীকে অমিত ইংরেজি বই কিনে উপহার দেয়, কিন্তু তাকে নিয়ে সন্ধ্যেবেলায় সে-সব বইয়ের আলোচনা করে না, যতী বুঝতে পারে আলোচনার ধারাটা এখন বইছে এক নতুন খাদে । আজকাল মোটরে বেড়াতে সে যতীকে ডাক পাড়ে না। যতীর বয়সে এ-কথা বোঝা কঠিন নয় যে, অমিতর “নিরুদেশ যাত্রা"র পার্টিতে তৃতীয় ব্যক্তির জায়গা হওয়া অসম্ভব । t যতী আর থাকতে পারলে না। অমিতকে নিজেই গায়ে পড়ে জিজ্ঞাসা করলে, “অমিতা, গুনলুম, মিস কেতকী মিত্রের সঙ্গে তোমার বিয়ে ?” بقيتين X