রবীন্দ্র-রচনাবলী س88b) এমন প্রবল নহে যে, তাহার নিকট সংকোচ অনুভব করা যায়। বরঞ্চ এই চিরনিপীড়িত জাতির নিকট নিঃসংকোচ স্বেচ্ছাচারই যথার্থ বলের ন্যায় প্রতিভাত হয়। আমরা যদি রাজপুরুষগণকে এমন কথা বুঝাইতে পারি যে, ন্যায়পথ লঙ্ঘন করিলে সেটাকে আমরা বাহাদুরি জ্ঞান করি না, অন্যায় যতই বলিষ্ঠ দেখিতে হউক আমাদের প্রাচ্য স্বভাবেও তাহা ঘৃণ্য এবং নিন্দনীয় বলিয়া অনুভূত হয়, এবং সুদৃঢ় নিরপেক্ষভাবে সর্বত্র সর্বলোকের প্রতি যথোচিত ন্যায়দণ্ড বিধান করিবার সাহস না থাকা আমাদের নিকট দুর্বলতা বলিয়াই প্রতিভাত হইয়া থাকে তবে আমাদের সেই কর্তব্যজ্ঞানের আদর্শকে ইংরেজ সম্মান না করিয়া থাকিতে পারিবেন না, কারণ সে-আদর্শের সহিত র্তাহাদের নিজেদের আদশের ঐক্য দেখিতে পাইবেন । যখন আমরা বহুকালব্যাপী পরাধীনতার বিষময় শিক্ষা ভুলিতে পারিব, যখন প্রবলের অন্যায়াচরণকে বিধির বিধানের স্বরূপ নীরবে অবশুসহ বলিয়া স্থির করিব না, যখন অন্যায়ের প্রতিবিধানচেষ্টা নিস্ফল হইলেও তাহাকে কর্তব্য বলিয়া জানিব এবং সেজন্য ত্যাগ স্বীকার ও কষ্ট সহ করিতে পরাস্মুখ হইব না, তখন আমাদের যথার্থ আনন্দের দিন উপস্থিত হইবে । তখন ব্রিটিশ গবর্মেন্টের ন্যায়পরতা কদাচ স্বার্থ পলিসি এবং ব্যক্তিবিশেষের খেয়ালের দ্বা বিচলিত হইবে না, আটল পর্বতের ন্যায় প্রজ-হৃদয়ের দৃঢ়ভিত্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত হইবে । তপন ইংরেজের সদব্যবহার শুভদৈবক্রমে ক্ষণিক অনুগ্রহের ন্যায় আমাদের নত মস্তকের উপর নিক্ষিপ্ত হইবে না, সম্মানের স্থায় আমাদের নিকট আহরিত হইবে,—আজ যাহা ভিক্ষাস্বরূপে প্রাপ্ত হইতেছি তখন তাহা অধিকারের ন্যায় গ্রহণ করিব । প্রশ্ন উঠিতে পারে, উপদেশ সহজ, কিন্তু উপায়টা কী ? তাহার উত্তরে বলিতে হয়, কোনো যথার্থ মঙ্গল কলকৌশলের দ্বারা পাওয়া যায় না, তাহার যা মূল্য তাহ সমস্তটাই দিতে হইবে। প্রত্যেককে প্রাণপণ করিতে হইবে, ঘরে ঘরে ভ্রাতা এবং সন্তানদিগকে শিক্ষা দিতে হইবে, পরিবার এবং সমাজের মধ্যে ন্যায়াচরণের অটল আদর্শ স্থাপন করিতে হইবে, নিজের ব্যবহারের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখিতে হইবে । সমস্ত ভালো কথার স্তায় এ-কথাটিও শুনিতে সহজ, করিতে কঠিন এবং অত্যন্ত পুরাতন । किङ्कु এই পুরাতন ལྟམས་། ཐཐཁ পথ ছাড়া স্থায়ী কল্যাণের আর কোনো নূতন সংক্ষিপ্ত গৃঢ় পথ আবিষ্কৃত হয় নাই । ծ Ֆo ֆ
