পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় Ø8ፃ বাহির হইয়া আসিলেই সকল পীড়ার অবসান হয়। অতএব যখন আমর পীড়া অনুভব করি তখন আমরা যেন না মনে করি এই পীড়াই চরম—ইহ মুক্তির বেদনা—একদিন যাহু বাহিরে আসিবার তাহ বাহিরে আসিবে এবং পীড়া অবসান হুইবে—“কুঁড়ির ভিতরে কাদিছে গন্ধ অন্ধ হয়ে” কবিতাটির ভিতরকার তাৎপর্য আমার কাছে এইরূপ মনে হয় । সেইজন্য উহার নাম দিতেছি “মুমুকু” । নামটা কিছু কড়া গোছের বটে—যদি অন্য কোনো সুশ্রাব্য নাম মনে উদয় হয় তবে চয়নিকার প্রকাশককে জানাইয়া দিয়ে । খেয়া খেয়া ১৩১৩ সালে প্রকাশিত হয়। “আমার ধর্ম” প্রবন্ধে (সবুজ পত্র, আশ্বিন-কাতিক, ১৩২৪ ) প্রসঙ্গক্রমে রবীন্দ্রনাথ খেয়ার কোনো কোনো কবিতার ব্যাখ্যা করিয়াছেন । খেয়াতে “আগমন” বলে যে কবিতা আছে, সে কবিতায় যে মহারাজ এলেন তিনি কে ? তিনি যে অশান্তি। সবাই রাত্রে দুয়ার বন্ধ করে শান্তিতে ঘুমিয়ে ছিল, কেউ মনে করেনি তিনি আসবেন । যদিও থেকে থেকে দ্বারে আঘাত লেগেছিল, যদিও মেঘগর্জনের মতে ক্ষণে ক্ষণে র্তার রথচক্রের ঘর্ঘরধ্বনি স্বপ্নের মধ্যেও শোনা গিয়েছিল তবু কেউ বিশ্বাস করতে ঢাচ্ছিল না যে, তিনি আসছেন, পাছে তাদের আরামে ব্যাঘাত ঘটে । কিন্তু দ্বার ভেঙে গেল—এলেন রাজা । ঐ খেয়াতে “দান” বলে একটা কবিতা আছে। তার বিষয়টি এই যে, ফুলের মালা চেয়েছিলুম, কিন্তু কী পেলুম ? “এ তো মালা নয় গো, এ যে তোমার তরবারি *-- | এমন যে দান এ পেয়ে কি আর শাস্তিতে থাকবার জো আছে ? শাস্তি যে বন্ধন যদি তাকে অশাস্তির ভিতর দিয়ে না পাওয়া যায়।-- "অনাবশ্বক” কবিতা সম্বন্ধে চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি পত্রে ( ৪ অক্টোবর ১৯৩৩ ) রবীন্দ্রনাথ লেখেন : খেয়ার “অনাবশুক” কবিতার মধ্যে কোনো প্রচ্ছন্ন অর্থ আছে বলে মনে করি নে। আমাদের ক্ষুধার জন্তে যা অত্যাবস্তক, তার কতই অপ্রয়োজনে ফেলাছড়া বার জীবনের ভোজে, ষে ভোজ উদাসীনের উদ্দেশে। আমাদের অনেক দান উৎসর্গ করি তার কাছে ধার তাতে দৃষ্টি নেই—সেই আবশ্বক নিবেদনে আনন্দও পেয়ে থাকি ; অথচ বঞ্চিত হয় যে, যে একান্ত আগ্রহ নিয়ে হাত পেতে মুখ