পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సి ర রবীন্দ্র-রচনাবলী গৃহ যার ফুটে আর মুদে পুনঃপুনঃ সে লক্ষ্মীরে ত্যাগ করে, শুন মূঢ় শুন । অহো, আপনার উপদেশের এক ফুৎকারেই আশা-প্রদীপের জলন্ত শিখা নির্বাপিত হয়ে যায় । আমাদের আচার্য বলেছেন না— দন্তং গলিতং পলিতং মুণ্ডং তদপি ন মুঞ্চতি আশাভাণ্ডং । মহারাজ,আশার কথা যদি তুললেন তবে বারিধি থেকে আর-একটি চৌপদী শোনাই— শৃঙ্খল বাধিয়া রাখে এই জানি সবে, আশার শৃঙ্খল কিন্তু অদ্ভুত এ ভবে। সে যাহারে বাধে সেই ঘুরে মরে পাকে, সে-বন্ধন ছাড়ে যারে স্থির হয়ে থাকে। হায় হায় অমূল্য আপনার বাণী! শ্রতিভূষণকে এক সহস্ৰ স্বর্ণমুদ্রা এখনই– ও কী মন্ত্রী, আবার কারা গোল করছে। সেই দুর্ভিক্ষগ্রস্ত প্রজার। ওদের এখনই শাস্ত হতে বলে । তা হলে মহারাজ, শ্রুতিভূষণকে ওদের কাছে পাঠিয়ে দিন না— আমরা ততক্ষণ যুদ্ধের পরামর্শটা— না না যুদ্ধ পরে হবে, শ্রুতিভূষণকে ছাড়তে পারছি নে । মহারাজ, স্বর্ণমুদ্রা দেবার কথা বলছিলেন কিন্তু সে দান যে ক্ষয় হয়ে যাবে। বৈরাগ্যবারিধি লিখছেন— স্বর্ণদান করে যেই করে দুঃখ দান যত স্বর্ণ ক্ষয় হয় ব্যথা পায় প্রাণ । শত দাও, লক্ষ দাও, হয়ে যায় শেষ, শূন্য ভাও ভরি’ শুধু থাকে মনঃক্লেশ । আহ। শরীর রোমাঞ্চিত হল। প্রভু কি তা হলে— না, আমি সহস্র মুদ্র চাই নে। দিন দিন, একটু পদধূলি দিন। সহস্র মুদ্রা চান না! এতবড়ো কথা! মহারাজ, এই সহস্র মুদ্রা অক্ষয় হয়ে যাতে মহারাজের পুণ্যফলকে অসীম করে আমি এমন-কিছু চাই। গোধনসমেত আপনার ওই কাঞ্চনপুর জনপদটি যদি ব্ৰহ্মত্র দান করেন কেবলমাত্র ওইটুকুতেই আমি সন্তুষ্ট থাকব ; কারণ বৈরাগ্যবারিধি বলছেন—