পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

みの3 রবীন্দ্র-রচনাবলী ঢেলে দিয়ে বয়ে চলেছি। নদী কেমন ক’রে ভার বহন করে দেখেছেন তো ? মাটির পাকা রাস্তাই হল যাকে বলেন ধ্রুব, তাই তো ভারকে কেবলই সে ভারী করে তোলে ; বোঝা তার উপর দিয়ে আর্তনাদ করতে করতে চলে, আর তারও বুক ক্ষত বিক্ষত হয়ে যায়। নদী আনন্দে বয়ে চলে, তাই তো সে আপনার ভার লাঘব করেছে ব’লেই বিশ্বের ভার লাঘব করে। আমরা ডাক দিয়েছি সকলের সব সুখ-দুঃখকে চলার লীলায় বয়ে নিয়ে যাবার জন্যে । আমাদের বৈরাগীর ডাক। আমাদের বৈরাগীর সর্দার যিনি, তিনি এই সংসারের পথ দিয়ে নেচে চলেছেন, তাই তো বসে থাকতে পারি নে— পথ দিয়ে কে যায় গো চলে ডাক দিয়ে সে যায়। আমার ঘরে থাকাই দায় । পথের হাওয়ায় কী সুর বাজে, বাজে আমার বুকের মাঝে, বাজে বেদনায় । আমার ঘরে থাকাই দায় । পূৰ্ণিমাতে সাগর হতে ছুটে এল বান, অামার লাগল প্রাণে টান । আপন মনে মেলে আঁখি আর কেন বা পড়ে থাকি কিসের ভাবনায় । অামার ঘরে থাকাই দায় ॥ যাক গে শ্রুতিভূষণ। ওহে কবিশেখর, আমার কী মুশকিল হয়েছে জানো । তোমার কথা আমি এক বিন্দুবিসর্গও বুঝতে পারি নে অথচ তোমার স্বরটা আমার বুকে গিয়ে বাজে। আর শ্রতিভূষণের ঠিক তার উলটো ; তার কথাগুলো খুবই স্পষ্ট বোঝা যায় হে— ব্যাকরণের সঙ্গেও মেলে— কিন্তু স্বরটা— সে কী আর বলব । মহারাজ, আমাদের কথা তো বোঝাবার জন্তে হয় নি, বাজবার জন্যে হয়েছে।