পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉○b" রবীন্দ্র-রচনাবলী সব লক্ষণগুলো কেমন খারাপ ঠেকছে। পেচাটা ডাকছিল, এতক্ষণ কিছু মনে হয় নি— কিন্তু— মাঠের ওপারে কুকুরটা কী রকম বিশ্ৰী স্বরে চেচাচ্ছে শুনছিস । ঠিক যেন তার পিঠের উপর ডাইনি সওয়ার হয়ে তাকে চাবকচ্ছে । যদি ফেরবার হত চন্দ্রহাস এতক্ষণে ফিরত । রাতটা কেটে গেলে বাচা যায়। শোন রে ভাই, ওই মেয়েমামুষের কান্না ! ওরা তো কঁদিছেই - কেবল র্কাদছেই, অথচ কাউকে ধরে রাখতে পারছে না । না; আর পারা যায় না— চুপ করে বসে থাকলেই যত কুলক্ষণ দেখা যায়। চল আমরাও যাই – পথ চললেই ভয় থাকে না । পথ দেখাবে কে । ওই যে বাউল আছে। কী হে, তুমি পথ দেখাতে পারে ? বাউল । পারি। বিশ্বাস করতে সাহস হয় না। তুমি চোখে না দেখে পথ বের কর শুধু গান গেয়ে? তুমি চন্দ্রহাসকে কী রাস্তা দেখিয়ে দিলে। যদি সে ফিরে আসে তবে তোমাকে বিশ্বাস করব । ফিরে যদি না আসে তা হলে কিন্তু— চন্দ্রহাসকে যে আমরা এত ভালোবাসতুম তা জানতুম না। এতদিন ওকে নিয়ে আমরা যা-খুশি তাই করেছি। যখন খেলি তখন খেলাটাই হয় বড়ো, যার সঙ্গে খেলি তাকে নজর করি নে। এবার যদি সে ফেরে, তাকে মুহূর্তের জন্যে অনাদর করব না। আমার মনে হচ্ছে আমরা কেবলই তাকে দুঃখ দিয়েছি। তার ভালোবাসা সব দুঃখকে ছাড়িয়ে উঠেছিল। সে যে কী স্বন্দর ছিল যখন তাকে চোখে দেখলুম তখন সেটা চোখে পড়ে নি। গান চোখের আলোয় দেখেছিলেম চোখের বাহিরে । | অস্তরে আজ দেখব, যখন আলোক নাহি রে ।