পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 Ꮔbr রবীন্দ্র-রচনাবলী যে-সকল প্রাচীন আরাধ্য প্রস্তর আমাদের মনুষ্যত্বের উপর চাপিয়া বসিয়া তাহার সমস্ত বল ও স্বাধীন পুরুষকার নিম্পেষিত করিয়া দিতেছে, তাহাদিগকে যথাযোগ্য ভক্তি ও বিচ্ছেদবেদন -সহকারে বিসর্জন দেওয়া আবখ্যক । )、 কর্তব্যনীতি অধ্যাপক হক্সলির মত ১ জগতে দেখা যায়, সুখ দুঃখ প্রাণীদের মধ্যে ঠিক ন্যায়বিচার-মতে বণ্টন হয় না। প্রথমত, নিম্নশ্ৰেণীয় প্রাণীদের এতটুকু বিবেকবুদ্ধি নাই যাহাতে তাহারা দণ্ডপুরস্কারের স্বরূপ সুখদুঃখের অধিকারী হইতে পারে। তাহার পরে মানুষের মধ্যেও দেখিতে পাই পাপাচরণ করিয়াও কত লোকে উন্নতিলাভ করিতেছে এবং পুণ্যবান দ্বারে দ্বারে অন্নভিক্ষা করিয়া ফিরিতেছে ; পিতার দোষে পুত্র কষ্টভোগ করিতেছে ; অজ্ঞানকৃত কার্যের ফল ইচ্ছাকৃত অপরাধের সমান হইয়া দাড়াইতেছে ; এবং একজন লোকের উৎপীড়ন বা অবিবেচনায় শত সহস্ৰ লোককে দুঃখবহন করিতে হইতেছে । অতএব জগতের নিয়মকে ধর্মনীতির অাইন-অনুসারে বিচার করিতে হইলে তাহাকে অপরাধী সাব্যস্ত করিতে হয় । কিন্তু সাহস করিয়া কোনো বিচারক সে-রায় প্রকাশ করিতে চান না । হিব্রুশাস্ত্র এ সম্বন্ধে চুপ করিয়া থাকেন। ভারতবর্ষ এবং গ্রীস আসামীর পক্ষ অবলম্বন করিয়া ওকালতি করিতে চেষ্টা করেন । ভারতবর্ষ বলেন, সকলকেই অসংখ্য পুর্বজন্মপরম্পরার কর্মফল ভোগ করিতে হয়। বিশ্বনিয়মে কোথাও কার্যকারণশ্বস্থলের ছেদ নাই ; মুখদুঃখও সেই অনন্ত অমোঘ অবিচ্ছিন্ন নিয়মের বশবর্তী । হিন্দুশাস্ত্রমতে পরিবর্তমান বস্তু এবং মনঃপদার্থের অভ্যস্তরে একটি নিত্যসত্ত আছে । জগতের মধ্যবর্তী সেই নিত্যপদার্থের নাম ব্রহ্ম এবং জীবের অন্তরস্থিত ধ্রুবসত্তাকে আত্মা কহে । জীবাত্মা কেবল ইন্দ্রিয়জ্ঞান বুদ্ধিবাসনা প্রভৃতি মায়া দ্বারা ব্ৰহ্ম হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া আছে। যাহারা অজ্ঞান তাহারা এই মায়াকেই সত্য বলিয়া S Evolution and Ethics by Thomas H. Huxley, F. R. S.