পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SS 8 दैी-झब्ञानी প্ৰবীণ বিশ্বজগৎ যখন করে কাজ স্পর্ধা ক’রে পরে ছুটির সাজ । কৃতিত্বেরে লুকিয়ে রাখে পরিহাসের ছলে । বনের তলে গাছে গাছে শ্যামল-রোপের মেলা, ফুলে ফলে নানান রঙে নিত্য নতুন খেলা । হির হতে কে জানতে পায়, শান্ত আকাশতলে প্ৰাণ বাচাবার কঠিন কর্মে নিত্য লড়াই চলে । চেষ্টা যখন নগ্ন হয়ে শাখায় পড়ে ধরা, তখন খেলার রূপ চলে যায়, তখন আসে জরা । বিলাসী নয় মেঘগুলো তো জলের ভারে ভরা, চেহারা তার বিলাসিতার রঙের ভূষণ পরা । বাইরে ওরা বুড়োমিকে দেয় না তো প্রশ্রয় অন্তরে তাই চিরস্তানের বীজমন্দ্র রায় । জল-ঝরানো ছেলেখেলা যেমনি বন্ধ করে ফ্যাকাশে হয় চেহারা তার, বয়স তাকে ধরে । দেহের মাঝে হাজার কাজে বহে প্ৰাণের বায়ু বুকের মধ্যে জাগায় নাচন, কণ্ঠে লাগায় সুর, সকল অঙ্গ অকারণে উৎসাহে ভরপুর রক্তে যখন ফুরোবে ওর খেলার নেশা খোজা তখনি কাজ অচল হবে, বয়স হবে বোঝা । ওগো তুমি কী করছ ভাই, স্তব্ধ সারাক্ষণবুদ্ধি তোমার আড়ষ্ট যে, বিমিয়ে-পড়া মন । নবীন বয়স যেই পেরোল খেলাঘরের দ্বারে, মরচে-পড়া লাগল তালা, বন্ধ একেবারে । ভালোমন্দ বিচারগুলো খোটায় যেন পেঁপাতা । আপন মনের তলায় তুমি তলিয়ে গেলে কোথা । চলার পথে আগলি দিয়ে বসে আছ স্থিরবাইরে এসো, বাইরে এসো, পরমগঔীর । কেবলই কি প্ৰবীণ তুমি, নবীন নও কি তাও । দিনে দিনে ছি ছি কেবল বুড়ো হয়েই যাও ! আশি বছর বয়স হবে ওই-যে পিপুল গাছ, এ আশ্বিনের রোদ দুরে ওর দেখলে বিপুল নাচ ? পাতায় পাতায় আবোল-তাবোল, শাখায় দোলাদুলি, পান্থ হাওয়ার সঙ্গে ও চায় করতে কোলাকুলি । ওগো প্ৰবীণ, চলো এবার সকল কাজের শেষে নবীন হাসি মুখে নিয়ে চরম খেলার বেশে ।