পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

वैधानेि ՀԳծ কিছু সন্ন্যাসীর মন্ত্র, কিছু লাগল প্রকৃতির মোহ । তার পরে এই যা দেখছ। ক্ষিতিশ। হায় রে, সন্ন্যাসী কি আমাদের মতো অভাজনদের হয়ে স্কুল প্ৰকৃতির তরফে ঘটকালি कन् व् । বঁাশরি। রাখো তোমার ছিবলেমি । ভুল করেছি। তোমাকে নিয়ে। যে মানুষ খাটি লিখিয়ে তার সামনে যখন দেখা দিয়েছে সৃষ্টিকল্পনার এমন একটা জীবন্ত আদর্শ দব দািব করছে যার নাড়ি, তার মুখ দিয়ে কি বেরোয় খেলো কথা । কেমন করে জাগাব তোমাকে । আমি যে প্ৰত্যক্ষ দেখছি। একটা মহারাচনার পূর্বরাগ, শুনছি। তার অন্তহীন নীরস কান্না । দেখতে পােচ্ছ না। অদৃষ্ট্রের একটা নিষ্ঠুর ব্যঙ্গ ? থাক গে, শেষ হল আমার কথা ! তোমার খাবার পাঠিয়ে দিতে চললুম। প্ৰস্থানোদ্যম ক্ষিতিশ । (ছুটে গিয়ে হাত চেপে ধরে) চাই নে খাবার। যেয়ো না তুমি । বঁশরি । (হাত ছিনিয়ে নিয়ে উচ্চহাস্যে) তোমার “বেমানান গল্পের নায়িকা পেয়েছ। আমাকে ! আমি ভয়ংকর সত্যি । ড্রেসিং-গাউন-পরা সতীশের প্রবেশ সতীশ । উচ্চহাসির আওয়াজ শুনলুম যে । বঁাশরি। উনি এতক্ষণ স্টেজের মুনুবাবুর নকল করছিলেন । সতীশ । ক্ষিতীশবাবুর নকল আসে নাকি । বাশরি। আসে বৈকি, ওঁর লেখা পড়লেই টের পাওয়া যায়। তুমি এর কাছে একটু বোসো, আমি ওঁর জন্য খাবার পাঠিয়ে দিইগে । ক্ষিতীশ । দরকার নেই, কাজ আছে, দেরি করতে পারব না । [প্ৰস্থান বঁাশরি । মনে থাকে যেন আজ বিকালে সিনেমা-তোমারই ‘পদ্মাবতী” । ক্ষিতীশ । (নেপথ্য হতে) সময় হবে না । বাঁশরি ; হবেই সময়, অন্য দিনের চেয়ে দু-ঘণ্টা আগে । সতীশ । আচ্ছা বঁশি, ঐ ক্ষিতীশের মধ্যে কি দেখতে পাও বলো তো । বাশরি । বিধাতা ওকে যে পরীক্ষার কাগজটা দিয়েছিলেন, দেখতে পাই তার উত্তরটা । আর দেখি তারই মাঝখানে পরীক্ষকের একটা মস্ত কাটা দাগ । সতীশ । এমন ফেল-করা জিনিস নিয়ে করবে কি । বঁাশরি । ডান হাত ধরে ওকে প্ৰথম শ্রেণীতে উত্তীৰ্ণ করে দেব । সতীশ । তার পরে বা হাত দিয়ে প্রাইজ দেবার প্ল্যান আছে নাকি । বঁাশরি । দিলে পরের ছেলের প্রতি নিষ্ঠুরতা করা হবে । সতীশ । ঘরের ছেলের প্রতিও । এ দিকে ও মহলের হাল খবরটা শুনেছ ? বাঁশরি ; ও মহলের খবর এ মহলে এসে পৌঁছয় না । হাওয়া বইছে উলটাে দিকে । সতীশ । কথা ছিল সুষমার বিয়ে হবে মাস খানেক বাদে, সম্প্রতি স্থির হয়েছে আসছে হপ্তায় । বঁাশরি । হঠাৎ দম এত দ্রুতবেগে চড়িয়ে দিলে যে ? সতীশ । ওদের হৃৎপিণ্ড কেঁপে উঠেছে দ্রুতবেগে, হঠাৎ দেখেছে তোমাকে রণরঙ্গিনী বেশে । তোমার তীর ছোটার আগেই ছুটে বেরিয়ে পড়তে চায়- এইরকম আন্দাজ । বঁাশরি। আমার তীর ! আধমরা প্ৰাণীকে আমি ছুই নে । বনমালী, মোটর ডাকো । [ বঁাশরির প্রস্থান