পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VO) NR - . ' রবীন্দ্র-রচনাবলী কোয়ার্টের অধিক জল শোষণ করে। তিনি ইহাও লক্ষ্য করিলেন যে, বাড়িটির উত্তাপ আরামের ব্যাঘাতজনক হইয়া উঠিল এবং সদিকাশির প্রবণতা দূর হইল। 8S স্বাস্থ্যবান থাকিতে হইলে, বাসকক্ষে প্রতি ঘণ্টায় বায়ুর পরিবর্তন আবশ্যক। বাতাসটা তো কোনো এক জায়গা হইতে আসা চাই-ই। স্বভাবতই ইহা বাহির হইতে পাওয়া যায়; অতএব বাসার মধ্যে ইহা ঠাণ্ডা। শুষ্ক অবস্থায় প্রবেশ করে। যদি তাজা বাতাস প্রবেশ করে, তবে বাসি হাওয়াকে বাহির হইয়া যাইতে হয়। এই হাওয়া গরম এবং আন্দ্র হইয়া যায়। প্ৰথমে ইহা ঘরের বাতাসের সমস্ত আদ্ৰতা গ্ৰহণ করে। ইহাও যথেষ্ট নহে, পরে ইহা আমাদের চর্মকে আক্রমণ করে। তখন আমাদের চর্ম হইতে ভাপ উঠিতেছে বোধ করি। তখন আমরা বলি, আমাদের শীত লাগিতেছে। তৎক্ষণাৎ আমরা আরো বেশি। উত্তাপ চাই। কাজেই আমরা বড়ো করিয়া আগুন জ্বালাই। বাতাসকে আমাদের চর্ম হইতে জলপান করিতে না দিয়া যদি জলপাত্র হইতে দিই, তবে অবিকল একই ফল পাওয়া যায়। 8 SR আর মাস কয়েকের মধ্যেই টিনের পাত্রে রক্ষিত তিমিমাংস ইংলন্ডের বাজারে উঠিবে। যেমন করিয়া স্যামন মাছ সংরক্ষণ করা হয়, ঠিক তেমনি কবিয়া ব্রিটিশ কলম্বিয়ার কীউকাউট দ্বীপে এই প্ৰকাণ্ড সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী জন্তুর মাংস টিনে ভরা হইতেছে। এই একটিমাত্র কারখানা হইতে আগামী মরসুমের সময় ত্ৰিশ হাজার বাক্স মাল প্ৰস্তুত হইবে; ইহার প্রত্যেকটিতে তিমিমাংসের এক পাউন্ড টিন চব্বিশটি করিয়া থাকিবে। এই টিনে রক্ষিত তিমিমাংসের বড়ো এক অংশ শরৎকাল নাগাইদ এ দেশে আসিয়া পৌঁছিবে এরূপ আশা আছে। ক্যানেড এবং ইউনাইটেড স্টেটস এই উভয় দেশেই আজ এই অতিকায় জন্তুর মাংস লোকে নিয়মিতভাবে আহার করিতেছে। 8○ এইখানে একটি কথা মনে রাখিতে হইবে যে, তিমি মৎস্যই নহে, উষ্ণশোণিত জীব। সে নির্মলখাদ্য-ভোজী। কাঁকড়া, গলদাচিংড়ি, বাইন প্রভূতি যাহা সাধারণত আমরা পছন্দ করিয়া থাকি, তাহার সম্বন্ধে কিন্তু এ কথা বলা চলে না। ইহার মাংস স্বাদু এবং ক্ষুধাবর্ধক দুই-ই। আমরা খাবার জিনিসের মতোই যে কেবল তিমির ব্যবহার করিতেছি তাহা নহে, উহার ত্বককে খুব মজবুত চামড়ায় পরিণত করা যাইতে পারে, ইহাও আবিষ্কার করা হইয়াছে। একটিমাত্র তিমি হইতে, তিন হইতে চারি হাজার বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়। 88 আমি এইমাত্র তোমার নিকট হইতে একখানি দীর্ঘ ও চিত্তগ্রাহী পত্ৰ পাইলাম এবং অবিলম্বে তাহার উত্তর দিতে বসিয়াছি। দীর্ঘকাল অনুপস্থিত থাকার পর G— এখানে ফিরিয়া আসিয়াছেন। তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ লইবার জন্য J-তে গিয়াছিলেন। স্থানপরিবর্তনের কারণে তিনি অনেক সুস্থ হইয়াছেন, কিন্তু ভারতবর্ষে যে ভয়ানক ম্যালেরিয়া জ্বরে তাহাকে অমান শয্যাগত করিয়া ফেলিয়াছিল, তাহার পরিণাম-ফল হইতে তাহাকে কখনো যথার্থীরাপে মুক্ত বলিয়া বোধ হয় না। আমি তোমার কথা প্রায়ই চিন্তা করি, এবং B-তে তোমার জীবনযাত্রা কিরূপ, সেই বিষয়ে আরো অধিক কিছু জানিতে ও শুনিতে ইচ্ছা করি। 8 ( ৪ঠা এপ্রিল তারিখে K- রণক্ষেত্রের পুরঃসীমায় মহাযুদ্ধে নিযুক্ত ছিলেন। আজ ২৬শে জুন, কিন্তু আমি ঐ পূর্বের তারিখের পর আর কোনো সংবাদ পাই নাই। বহির্জগৎ হইতে এমন সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন