পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণগাথা S Sసె আহবানে স্থষ্টি-উৎসব জাগল তখন তার প্রথম আরম্ভ হল আকাশে আকাশে বহ্নিমালার নৃত্যে স্বৰ্ষচন্দ্রের নৃত্য আজও বিরাম পেল না, ষড়ঋতুর নৃত্য আজও চলেছে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে । মুরলোকে আলোক-অন্ধকারের যুগলমৃত্য, নরলোকে অশ্রান্ত নৃত্য জন্মমৃত্যুর , স্থষ্টির আদিম ভাষাই এই নৃত্য, তার অস্তিমেও উন্মত্ত হয়ে উঠবে এই নৃত্যের ভাষাতেই প্রলয়ের অগ্নিনটিনী। মানুষের অঙ্গে অঙ্গে স্বর্গের আনন্দকে তরঙ্গিত করবার ভার নিয়েছি আমরাই ; তোমাদের মোহাচ্ছন্ন চোখে নির্মল দৃষ্টি জাগাব, নইলে বৃথা আমাদের সাধনা । মম চিত্তে নিতি নৃত্যে কে যে নাচে তাত থৈ থৈ, তাত থৈ থৈ, তাত থৈ থৈ । তারি সঙ্গে কী মৃদঙ্গে সদ বাজে তাত থৈ থৈ, তাত থৈ থৈ, তাত থৈ থৈ । হাসিকান্ন। হীর পান্ন দোলে ভালে ; কাপে ছন্দে ভালে৷ মন্দ তালে তালে ; নাচে জন্ম, নাচে মৃত্যু পাছে পাছে তাত থৈ থৈ, তাত থৈ থৈ, তাত থৈ থৈ । কী আনন্দ, কী আনন্দ, কী আনন্দ– দিবারাত্রি নাচে মুক্তি, নাচে বন্ধ ; সে তরঙ্গে ছুটি রঙ্গে পাছে পাছে তাত থৈ থৈ, তাত থৈ থৈ, তাত থৈ থৈ ৷ রাজা । এর উপরে আর কথা চলে না। এখন আমার একটা অকুরোধ আছে । অামি ভালোবাসি কড়া পাকের রস । বর্ষার সবটাই তে কান্না নয়, ওতে আছে ঐরাবতের গর্জন, আছে উচ্চৈঃশ্রবার দৌড় । নটরাজ। আছে বই কি ৷ এসে তবে বিদ্যুন্ময়ী, শ্রাবণ যে স্বয়ং বজ্রপাণি মহেন্দ্রের সভাসদ, নৃত্যে সুরে তোমরা তার প্রমাণ করে দাও । দেখা না-দেখায় মেশ হে বিছাৎলত, কঁপাও ঝড়ের বুকে এ কী ব্যাকুলত । গগনে সে ঘুরে ঘুরে খোজে কাছে, খোজে দূরে ; সহস কী হাসি হাস’, নাহি কহ কথা ।