পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী مياه . কিন্তু দেখা যায় স্বর্ষের আলোর বর্ণচ্ছটায় সোডিয়ম গ্যাসের ঐ দুটি উজ্জল হলদে রেখা চুরি গেছে, তার জায়গায় রয়েছে দুটাে কালো দাগ। বিজ্ঞানী বলেন উত্তপ্ত কোনো গ্যাসীয় জিনিসের আলো সেই গ্যাসেরই অপেক্ষাকৃত ঠাও স্তরের ভিতর দিয়ে আসার সময় সম্পূর্ণ শোষিত হয়। এক্ষেত্রে আলোর অভাবেই ষে কালো দাগের স্বষ্টি তা নয়। বন্ধত সূর্যের বর্ণমগুলে যে সোডিয়ম গ্যাস স্বর্ষের আলো আটক করে সেও আপন উত্তাপ অনুযায়ী আলো ছড়িয়ে দেয়, আলোকমণ্ডলের তুলনায় উত্তাপ কম বলে এর আলো হয় অনেকটা স্নান । এই মান আলো বর্ণচ্ছটায় উজ্জল আলোর পাশে কালোর বিভ্রম জন্মায় । , মৌলিক জিনিস মাত্রেরই আলো ভেঙে প্রত্যেকটির বর্ণচ্ছটার ফর্দ তৈরি হয়ে গেছে। এই বর্ণভেদের সঙ্গে তুলনা করলেই বস্তভেদ ধরা পড়বে তা সে যেখানেই থাক, কেবল গ্যাসীয় অবস্থায় থাকা চাই । 跑 পৃথিবী থেকে যে বিরেনকাইটি মৌলিক পদার্থের খবর পাওয়া গেছে স্বর্ষে তার সবগুলিরই থাকা উচিত, কেননা পৃথিবী স্বর্ষেরই দেহজাত। প্রথম পরীক্ষায় পাওয়া গিয়েছিল ছত্রিশটি মাত্র জিনিস। বাকিগুলির কী হল সেই প্রশ্নের মীমাংসা করছেন বাঙালী বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা। নূতন সন্ধানপথ বের করে স্বর্ষে আরও কতকগুলি মৌলিক জিনিস তিনি ধরতে পেরেছেন । তার পথ বেয়ে প্রায় সবগুলিরই খবর মিলেছে। আজও যেগুলি গরঠিকানা, মাঝপথেই পৃথিবীর হাওয়া তাদের সংবাদ শুষে নেয়। সব রঙ মিলে সূর্যের আলো সাদা, তবে কেন নানা জিনিসের নানা রঙ দেখি । তার কারণ সব জিনিস সব রঙ নিজের মধ্যে নেয় না, কোনো-কোনোটাকে বিনা ওজরে বাইরে বিদায় করে দেয়। সেই ফেরত-দেওয়া রঙটাই আমাদের চোখের লাভ। মোটা বুটিং যে রসটা শুষে ফেলে সে কারো ভোগে লাগে না, যে রসটা সে নেয় না সেই উৰ্বেত্ত রসটাই আমাদের পাওনা। এও তেমনি। চুনি পাথর স্বৰ্যকিরণের আর-সব রকম ঢেউকেই মেনে নেয়, ফিরিয়ে দেয় লাল রঙকে । তার এই ত্যাগের দানেই চুনির খ্যাতি। যা নিজে আত্মসাৎ করেছে তার কোনো খ্যাতি নেই। লাল রঙটাই কেন যে ও নেয় না, আর নীল রঙের পরেই নীল পাথরের কেন সম্পূর্ণ বৈরাগ্য এ প্রশ্নের জবাব ওদের পরমাণুমহলে লুকানো রইল। স্বর্ষের সব ঢেউকেই পাকা-চুল ফিরে পাঠায় তাই সে সাদা, কাচা-চুল কোনো চেউই ফিরে দেয় না, অর্থাৎ আলোর কোনো অংশই তার কাছ থেকে ছাড়া পায় না, তাই সে কালো। জগতের সব জিনিসই যদি স্বর্ষের সব রঙই করত আত্মসাৎ তা হলে সেই কৃপণের জগৎটা দেখা দিত কালো হয়ে, অর্থাৎ দেখাই দিত না। যেন খবর বিলোবার সাতটা