পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছবি ও গান জ্বলন্ত বিদ্যুৎ-আহি ক্ষণে ক্ষণে রহি রহি অন্ধকারে করিছে। দংশন । কুম্ভকৰ্ণ অন্ধকার নিদ্রা টুটি বার বার উঠিতেছে করিয়া গর্জন । শূন্যে যেন স্থান নাই, পরিপূর্ণ সব ঠাই, সুকঠিন আঁধার চাপিয়া । ঝড় বহে মনে হয়, ও যেন রে ঝড় নয়, অন্ধকার দুলিছে কঁপিয়া । মাঝে মাঝে থরহর কোথা হতে মরমর কেঁদে কেঁদে উঠিছে অরণ্য । নিশাচর যেন রে অগণ্য । কে যেন রে মুহুর্মুহু নিশ্বাস ফেলিছে হুহু, হু হু করে কেন্দে কেঁদে ওঠে, সুদূর অরণ্যতলে ডালপালা পায়ে দ’লে আর্তনাদ করে যেন ছোটে । এ অনন্ত অন্ধকারে কে রে সে, খুজিছে কারে, তন্ন তন্ন আকাশ গহর । তারে নাহি দেখে কেহ। শুধু শিহরায় দেহ শুনি তার তীব্র কণ্ঠস্বর | তুই কি রে নিশীথিনী অন্ধকারে অনাথিনী হারাইলি জগতেরে তোর ? অনন্ত আকাশ-’পরি ছুটিস রে হাহা করি, আলোড়িয়া অন্ধকার ঘোর । তাই কি রে থেকে থেকে নাম ধরে ডেকে ডেকে জগতেরে করিস আহ্বান | শুনি আজি তোর স্বর শিহরিত কলেবর কঁদিয়া উঠিছে কার্য প্ৰাণ । কে আজি রে তোর সাথে ধরি তোর হাতে হাতে খুঁজিতে চাহিছে যেন কারে । কে চাহে কঁদিতে অন্ধকারে ! আঁধারেতে আঁখি ফুটে ঝটিকার পরে ছুটে তীক্ষশিখা বিদ্যুৎ মাড়ায়ে, হু হু করি নিশ্বাসিয়া চলে যাবে উদাসিয়া কেশপাশ আকাশে ছড়ায়ে । উলঙ্গিনী উন্মাদিনী ঝটিকার কণ্ঠ জিনি তীব্র কণ্ঠে ডাকিবে তাহারে, সে বিলাপ কেঁপে কেঁপে বেড়াবে আকাশ ব্যেপে ধবনিয়া অনন্ত অন্ধকারে । > ○ぬ