পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানসী তখন উষার আধো আলো পড়েছিল মুখে দুজনার । তখন কে জানে করে, কে জানিত আপনারে, কে জানিত সংসারের বিচিত্র ব্যাপার ! কে জানিত শ্ৰান্তি তৃপ্তি ভয়, কে জানিত নৈরাশ্যযাতনা ! কে জানিত শুধু ছায়া যৌবনের মোহমায়া, আপনার হৃদয়ের সহস্ৰ ছলনা ! আঁখি মেলি যারে ভালো লাগে তাহারেই ভালো বলে জানি । সব প্ৰেম প্ৰেম নয় ছিল না তো সে সংশয়, যে আমারে কাছে টানে তারে কাছে টানি । অনন্ত বাসরসুখ যেন নিত্যহাসি প্রকৃতিবন্ধুর— পুষ্প যেন চিরপ্রাণ, পাখির অশ্রান্ত গান, বিশ্ব করেছিল ভান অনন্ত মধুর | সেই প্ৰাতে প্ৰথম যৌবনে, ভেবেছিনু এ হৃদয় অনন্ত অমৃতময়, প্রেম চিরদিন রায় এ চিরজীবনে । তাই সেই আশার উল্লাসে মুখ তুলে চেয়েছিনু মুখে | সুধাপাত্ৰ লয়ে হাতে কিরণকিরীটি মাথে তরুণ দেবতাসমা দাড়ানু সম্মুখে । পত্রপুষ্প-গ্ৰহতারা-ভরা নীলাম্বরে মগ্ন চরাচর, তুমি তারি মাঝখানে কী মূর্তি আঁকিলে প্ৰাণে কী ললাট, কী নয়ন, কী শান্ত অধর ! সুগভীর কলধ্বনিময় এ বিশ্বের রহস্য অকুল, মাঝে তুমি শতদল ফুটেছিলে ঢলঢল— তীরে আমি দাড়াইয়া সৌরভে আকুল । RWbŵ