পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিরকুমার-সভা ১৬৫ হবে। তাই ওরা যা বলছে তাই শুনতে হচ্ছে । ( পুরবালার প্রতি ) অামাকে-মুদ্ধ মদ ধরাবে দেখছি । l পুরবাল । বিদায় করে, বিদায় করে, এখনই বিদায় করে। জগত্তারিণী। (ব্যস্ত হইয়া) বাবা, এখানে মুর্গি খাওয়া-টাওয়া হবে না, তুমি ওদের বিদায় করে দাও । আমার ঘাট হয়েছিল আমি রসিককাকাকে পাত্র সন্ধান করতে দিয়েছিলুম। র্তার দ্বারা যদি কোনো কাজ পাওয়া যায়। [ রমণীগণের প্রস্থান অক্ষয় ঘরে আসিয়া দেখেন, মৃত্যুঞ্জয় পলায়নের উপক্রম করিতেছে এবং দারুকেশ্বর হাত ধরিয়া তাহাকে টানাটানি করিয়া রাখিবার চেষ্টা করিতেছে অক্ষয়ের অবর্তমানে মৃত্যুঞ্জয় অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা করির সন্ত্রস্ত হইয়া উঠিয়াছে মৃত্যুঞ্জয় । ( অক্ষয়কে রাগের স্বরে ) না মশায়, আমি ক্রিস্টান হতে পারব না। আমার বিয়ে করে কাজ নেই। অক্ষয় । তা মশায়, আপনাকে কে পায়ে ধরাধরি করছে । দারুকেশ্বর । আমি রাজি আছি মশায় । 蝎 অক্ষয়। রাজি থাকেন তো গির্জেয় যান মশায় । আমার সাত পুরুষে ক্রিশান করা ব্যাবসা নয় । দারুকেশ্বর। ওই-যে কোন বিশ্বাসের কথা বললেন— 疊 অক্ষয় । তিনি টেরিটির বাজারে থাকেন, তার ঠিকানা লিখে দিচ্ছি। দারুকেশ্বর। আর বিবাহটা ? অক্ষয় । সেটা এ বংশে নয়। দারুকেশ্বর । তা হলে এতক্ষণ পরিহাস করছিলেন মশায় ? খাওয়াটাও কি— অক্ষয় । সেটাও এ ঘরে নয় । দারুকেশ্বর । অন্তত হোটেলে ? অক্ষয় । সে কথা ভালো । টাকার ব্যাগ হইতে গুটিকয়েক টাকা বাহির করিয়া দুটিকে বিদায় করিয়া দিলেন নৃপর হাত ধরিয়া টানিয়া নীরবালা বসন্তকালের দমকা হাওয়ার মতো ঘরের মধ্যে আসির প্রবেশ করিল নীরবালা। মুখুজ্জেমশায়, দিদি তো দুটির কোনোটিকেই বাদ দিতে চান না। নৃপবালা । (নীরর কপোলে গুটি দুই-তিন অঙ্গুলির আঘাত করিয়া) ফের মিথ্যে কথা বলছিস । *: অক্ষয়। ব্যস্ত হোস নে ভাই, সত্যমিথ্যের প্রভেদ আমি একটু-একটু বুঝতে পারি।