পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

やか○br झीझ-झष्मावर्नी নেই। বলা বাহুল্য, সংস্কারকে অস্বীকার করবার সম্পর্ধা আমার নেই। কিন্তু, সংস্কারও তো নির্বাচিত এই হল আমার মূলে আপত্তি। বাংলা সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্যের অস্তিত্ব নিয়েই যদি কোনো ব্যক্তি সন্দিহান হয়, তবে সে ব্যক্তি তার দোহাই'এ মানবে না যে, ভবিষ্যতের বাংলা গান পুরাতন বাংলা গানের ধারাতেই চলবে। আপনি অবশ্য তা বলেন নি, বলেন না বলতে পারেন না ; কারণ এই—আপনার আপত্তি পুনরাবৃত্তিরই বিপক্ষে, হিন্দুস্থানী গানের পুনরাবৃত্তির বিপক্ষে নয়। কারণ, আপনার যুক্তি প্ৰাণধর্মের অনুযায়ী। কিন্তু, লোকে ভুল বোঝবার ও করবার সম্ভাবনা রয়েছে। তাকে গোড়া থেকেই হত্যা করা ভালো। গ্রামা সংগীতের পুনরুদ্ধার চলছে, ঠুংরী গজলের বিপক্ষে প্রতিক্রিয়ায় দেশে যা ছিল তাই ভালো ভাবতে লোকে শুরু করেছে- তাই আজ। আপনার মন্তব্য পরিষ্কার করে গুছিয়ে বলার বড়োই দরকার। প্রদেশাত্মবোধের যুগ এসে গিয়েছে। জাতিগত বৈশিষ্ট্য ও সংস্কৃতি তর্কের খাতিরে নাহয় মানলুম। কিন্তু, riri culture trait-C3, নির্বাচন করে নিজের মতে রূপ দেবার জন্য তাকে অন্তত জীবন্ত হতে হবে। মারহাট্টা অঞ্চলে যাট বৎসর পূর্বে উত্তরভারতীয় গায়কিপদ্ধতির চলন ছিল না, অথচ এখন সেই পদ্ধতির শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধিরা মারহাট্টি। মারহাট্টির উত্তরভারতের ঢঙ নিলে কেন— এবং মাদ্রাজিরা নিলে না। কেন ? কারণ এ নয়- রহমৎখা বালাজীবোয়া বোম্বাই-পুনাতে থাকতেন। কারণ, মারহাটিসংস্কৃতি হয় ছিল না, নাহয় গিয়েছিল শুকিয়ে, এবং মাদ্রাজের একটা-কিছু ছিল। মারহাট্টি গায়ক অবশ্য দক্ষিণী অলংকার হিন্দুস্থানী রাগিণীর গায়ে পরান, কিন্তু গায়কি উত্তরভারতীয়ই থাকে। মাদ্রাজি গায়ক অপেক্ষাকৃত বেশি রক্ষণশীল। বাঙালি গায়ককে কী বলবেন? ধরাই যােক- বাংলা দেশে যাত্রাগানে, কবির গানে, তর্জায়, জারি-ভাটিয়াল কীর্তন আগমনীতে, বিদ্যাসুন্দর-যাত্রায় ও নিধুবাবুর টপ্পায় এবং রামপ্রসাদ প্রভৃতি ভক্তের গানে কথারই ছিল প্রাধান্য— সুরের সীমা ছিল সুনির্দিষ্ট, তানে ছিল সংযম। কিন্তু, সে ধারাও তো শুকিয়েছে? কেন তার বদলে সর্বত্র জগাখিচুড়ির পরিবেশন হচ্ছে? তাতে নেই। কী? আপনার, অতুলপ্রসাদের, দ্বিজেন্দ্রলালের ভাত-ডাল-তরকারি সবই আছে— পেয়াজ রসুনও বাদ পড়ে নি। কেন এ কাণ্ড হল ? অথচ আপনারাও যেমন বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকারী, নব্যাতন্ত্রের রচয়িতারাও তাই। তঁদের নাহয় বাদ দিলাম।— কিন্তু, পাঁচলির সঙ্গে যে শান্তিনিকেতনের গানের সম্বন্ধ নেই, যাত্রার জুড়ির গানের সঙ্গে যে দ্বিজেন্দ্রলালের কোরাসের কোনো আত্মীয়তা নেই, বিদ্যাসুন্দরী গানের সঙ্গে যে অতুলপ্রসাদের ংগীতের কোনো যোগসূত্র নেই-এটুকু আপনাকে মানতেই হবে। আজকালকার ট্ৰেডইউনিয়ন মধ্যযুগের গণ শ্রেণী পুগের বংশধর নয়। তা হলে বুঝতে হবে বাংলার সংগীত-পরিশীলন ও অনুশীলনের ধারা ছিল একাধিক। অতএব, প্রশ্ন হল- বাংলার বৈশিষ্ট্য অর্থেকত দিনের কয় পুরুষের ঐতিহাসিক পলিমাটি বুঝব? উনবিংশ শতাব্দীর পূর্বে কী ছিল সঠিক জানি না, কিন্তু গীতগোবিন্দে পদাবলীতে বাঘা-বাঘ রাগরাগিণীর নাম বসানাে আছে। ডা. প্ৰবােধ বাগচী বলেন- আরো আগে ছিল। হয়তো নামকরণ পরে হয়েছে। গায়নও জানা নেই। কিন্তু, বিষ্ণুপুর বেথিয়া ঢাকা অঞ্চলে মুসলমান ওস্তাদ অনেক দিন থেকেই রয়েছেন। ইংরেজ-নবাব জমিদার এবং নতুন শ্রেণীর বিত্তশালী মহাজনরাও খুঁকোর নল মুখে দিয়ে বাইজির গান শুনতেন। শ্ৰাদ্ধবাসরে কীর্তনীয়ার সঙ্গে বাইজিরও ডাক পড়ত। তার পর ওয়াজিদ আলি শাহের দরবারে তো সকলেই যেতেন। গোবরডাঙার গঙ্গানারায়ণ ভট্ট,