পাতা:লিঙ্গপুরাণ (পঞ্চানন তর্করত্ন).pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূৰ্ব্বভাগ। অতিথিদিথকেই পূজা করিবে। সেই পতিব্ৰতা কামিনী এইরূপ কথিত হইয়া মালার স্তায় পতির আজ্ঞা মস্তকে গ্রহণ করত বিচরণ করিতে লাগিলেন । অনস্তর হে দ্বিজোত্তম ! সাক্ষাং ধৰ্ম্মদেব তাহাদিগের শ্রদ্ধা পরীক্ষার নিমিত্ত দ্বিজোত্তমবেশে মুনির গৃহে আগমন করিলেন। নিম্পাপ সুদশর্নভাৰ্য্যা ব্রাহ্মণরূপী ধৰ্ম্মদেবকে অবলোকন করিয়া অৰ্ঘ্যাদি দ্বারা যথাবিধি তাহার পূজা করিলেন ; এবং ধৰ্ম্মদেব এইরূপে পূজিত হইয়া বলিলেন, হে ভদ্রে ! তোমার বুদ্ধিমান পতি সুদৰ্শন কোথায় ? ৪২—৫৪ হে আর্য্যে ! অদ্য আমি অস্থাদির প্রার্থনা করিব না, আজ আমি তোমাকেই চাই। সেই পতিব্ৰত কামিনী পূৰ্ব্বোক্ত স্বামিবাক্য স্মরণ করত লজ্জাবনত মুখে চক্ষুদ্বয় নির্মীলিত করিয়া তাহার নিকট গমন করিলেন। ধৰ্ম্মদেব, র্তাহাকে আরও কিছু বলিলেন, তিনিও পতির আজ্ঞানুসারে আত্মসমপর্ণার্থ প্রস্তুত হইলেন। ইত্যবসরে তাহার স্বামী মহামুনি সুদৰ্শন, গৃহদ্বারে উপস্থিত হইয়া বলিতে লাগিলেন, হে ভদ্রে ! কোথায় যাইলে, এই স্থানে এস । তখন অতিথি বলিলেন, হে মহাভাগ সুদৰ্শন ! আমি তোমার ভাৰ্য্যর সহিত সুরতাসক্ত আছি, এক্ষণে কৰ্ত্তব্য কি তাহ বল। তার পরেই বলিলেন, হে বিপ্রেন্দ্ৰ ! সুরতান্ত হইল, আমি পরম সন্তোষলাভ করিলাম। মহামুনি সুদৰ্শন সন্তুষ্ট হুইয়া বলিলেন, —আপনি আমার ভাৰ্য্যাকে যথেচ্ছ ভোগ করুন, আমি চলিলাম। ধৰ্ম্মদেব যারপরনাই সন্তুষ্ট হইয়া স্বমূৰ্ত্তি দর্শন করাইলেন। অনন্তর মহাদু্যতি ধৰ্ম্মদেব, বাঞ্ছিত বর প্রদান করিয়া বলিলেন, হে দ্বিজোত্তম ! আমি তোমার সুশোভন ভাৰ্য্যাকে ভোগ করিবার কল্পনাও করি নাই, ইহাতে কোন সন্দেহও নাই, কেবল শ্রদ্ধা পরীক্ষা করিবার জন্তই আগমন করিয়াছি। হে-মুত্রত ! তুমি ধৰ্ম্মবলে মৃত্যুকেও জয় করিলে। অহো! ইহার তপস্কার কি অদ্ভুত বল! এই কথা দলিয়া ধৰ্ম্মেদেব গমন কুরিলেন। অতএব সকল অতিথিকেই সৰ্ব্বদ পূজা করা উচিত। হে ভাগ্যবিহীন দ্বিজেন্দ্রগণ ! আর বহু বাক্যব্যয়ে প্রয়োজন নাই, তোমরা ভগবান্‌ শঙ্করেরই শরণাগত হও । দ্বিজগণ ব্ৰহ্মার সেই বাক্য শ্রবণ করত দুঃখিত ও ব্যাকুলনয়ন হুইয়া অভিবদনপূর্বক বলিলেন। ৫৫-৬৬। হে মহাভাগ ! আমরা জীবনের জন্ত কিছুই ভাবিত হই নাই। কিন্তু স্ত্রীলোকদিগের ষিকৃতাবস্থা অগ্রাহ করিতে না পারিয়া, জমিন্দিত মহাদেবকে নিদা ৪৩ করিয়াছি এবং অজ্ঞানবশতঃ সৰ্ব্বব্যাপী, পিনাকী নীললোহিত মহাদেবকেও অভিসম্পাত প্রদান করিয়াছি । কিন্তু তাহার অবলোকনমাত্রেই শাপ-শক্তি কুড়িত হইয়াছে। হে দেবেশ । উমাকার কপী দেবদেবকে দর্শন করিতে যাদৃশ সন্ন্যাসের আবগুক, ক্রমে ক্রমে সেই সন্ন্যাস-ধর্শ্বের বর্ণনা করুন। পিতামহ বলিলেম, হে দ্বিজোত্তমগণ! প্রথমতঃ মুনি-ধৰ্ম্ম অবলম্বন করিয়া পরম শ্রদ্ধা ও তাৎপৰ্য্য গ্রহণপূর্বক বেদাধ্যয়ন করিবে। • জ্ঞানান্তকাল বা স্বাদশ বর্য অধ্যয়ন করিয়া সমাপ্তিস্নান করত দারগ্রহণ ও সুসস্তান উৎপাদন করিতে হইবে। অনুরূপ বৃত্তি বিধানানন্তর পুত্রগণকে বিভক্ত ও স্বয়ং মুনিবৃত্তি অবলম্বন করিয়া, অরণ্যে প্রবেশপূৰ্ব্বক অগ্নিষ্ট্রোমাদি যজ্ঞ দ্বার পরমাত্মাস্বরূপ যজ্ঞেশ্বর, নারায়ণের অগ্নিতে পূজা করিবে। অসম্ভর স্বাদশ বর্ষ বা এক বর্ষ অথবা স্বাদশপক্ষ বা স্বাদশদিন দুগ্ধমাত্র পান করত শান্ত ও সংযত হইয়া, দেবগণের পূজা করিতে হইবে। এইরূপে পূজাদি সমাপন করিয়া, মন্ত্র পাঠপূৰ্ব্বক যঞ্জীয় পাত্ৰসকল অগ্নিতে আহুতি প্রদান করত মৃন্ময়পাত্র সলিলে নিক্ষিপ্ত ও তৈজসাদি গুরুকে দান করিবে। অসঙ্কুচিত চিত্তে সমস্ত ধন ব্রাহ্মণদিগকে দান ও ভূমি-বিলুষ্ঠিতমস্তকে গুরুকে প্ৰণুম করত ধতি ও সংসারবিরাগী হইয়া, সন্ন্যাসধৰ্ম্ম অবলম্বন করবে। ৬৭-৭৬ । বিবেকী, শিখার সহিত কেশছেদন করিয়া যজ্ঞোপবীত পরিত্যাগপূর্বক ভুঃ *াহা বলিয়া পাঁচবার সলিলে আহুতি প্রদান করিবে। তন্মুম্ভর খতি, শৈবমুক্তি লাভ করিবার জন্ত অনশন বা জলমাত্র পান করিয়৷ এইরূপ ব্ৰত আচরণ করিবে। যতিধৰ্ম্মাবলম্বী হইয়া পর্ণভক্ষণ, দুগ্ধ বা জল মাত্র পান অথবা ফল ভোজন করিয়া জীবন স্থাপন করত যদি মৃত্যু উপস্থিত না হয়, তবে এক বৎসর বা ছয় মাস কাল প্রস্থানাদি কষ্ট সহ করিতে হুইবে । হে দৃঢ়ব্ৰত মুনিগণ! এইরূপ ব্ৰতাচরণ করিয়া ভক্তিযুক্ত নর, কৰ্ম্মফলে শিবসাযুজ্য বা অবিলম্বেই মুক্তি লাভ করিতে সমর্থ হয়। প্রকৃত রুদ্রভক্তের যথানিয়মে পূৰ্ব্বোক্ত ত্যাগাদি, নানাবিধ যজ্ঞ, দান, হোম, বিবিধ শাস্ত্রাধ্যয়ন বা বোপারে কোন আবস্তকতা নাই। মহাত্মা শ্বেতমুনি ভবভক্তিবলে মৃত্যুকে জয় করিয়াছিলেন, আেমাদিগেরও সেই পরমাত্মাস্বরূপ মঙ্গলময় মহাদেবে ভক্তি বৃদ্ধি হউক । ৭৭-৮৩। উনত্রিংশ অধ্যায় সমাপ্ত।