পাতা:লিপিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মেঘদূত
১১

সুর দিয়ে ভরিয়ে দিতে হয়। অনন্ত আকাশের ফাঁক না পেলে বাঁশি বাজে না।

 সেই আমাদের মাঝের আকাশটি আঁধিতে ঢেকেচে, প্রতিদিনের কাজে কর্ম্মে কথায় ভরে গিয়েচে, প্রতিদিনের ভয়ভাবনা কৃপণতায়।

 এক-একদিন জ্যোৎস্নারাত্রে হাওয়া দেয়, বিছানার পরে জেগে বসে বুক ব্যথিয়ে ওঠে, মনে পড়ে এই পাশের লোকটিকে তো হারিয়েচি।

 এই বিরহ মিট্‌বে কেমন করে, আমার অনন্তের সঙ্গে তার অনন্তের বিরহ?

 দিনের শেষে কাজের থেকে ফিরে এসে যার সঙ্গে কথা বলি সে কে? সে ত সংসারের হাজার লোকের মধ্যে একজন, তাকে তো জানা হয়েচে, চেনা হয়েচে, সে ত ফুরিয়ে গেচে।

 কিন্তু ওর মধ্যে কোথায় সেই আমার অফুরান একজন, সেই আমার একটি মাত্র? ওকে আবার নূতন করে খুঁজে পাই কোন্ কূলহারা কামনার ধারে?

 ওর-সঙ্গে আবার একবার কথা বলি সময়ের কোন্ ফাঁকে, বনমল্লিকার গন্ধে নিবিড় কোন্ কর্ম্মহীন সন্ধ্যার অন্ধকারে?