পাতা:লুকোচুরি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
দারোগার দপ্তর, ১৯৬ সংখ্যা।

নৌকাখানি তখনও ঘাটে বাঁধা ছিল। আমি দাসীকে লইয়া একেবারে নৌকার ভিতরে গিয়া পড়িলাম।

 মাঝি মোল্লাগণ গভীর নিদ্রায় নিদ্রিত ছিল। সুতরাং তাহারা আমাকে দেখিতে পাইল না। নৌকার ভিতরে অনাথবাবুর শ্বশুরও নিদ্রিত ছিলেন। দাসী তাঁহার নিকট গিয়া তাঁহাকে জাগ্রত করিয়া সকল কথা প্রকাশ করিল।

 দাসীর মুখে সকল কথা শুনিয়া তিনি স্তম্ভিত হইলেন এবং দাসীকে অজস্র গালি বর্ষণ করিতে লাগিলেন। আমি আর স্থির থাকিতে না পারিয়া তখনই তাঁহার নিকটে গমন করিলাম। পরে বলিলাম, “দাসীকে গালি দিলে কোন ফল হইবে না। উহার কোন অপরাধ নাই, আমাদের সকলের চক্ষে ধূলি দিয়া বিমলাকে এখান হইতে লইয়া যাওয়া সামান্য দাসীর কর্ম্ম নহে। এখন আপনি বাহিরে আসুন এবং আমার সঙ্গে আপনার জামাতার নিকটে চলুন।”

 আমার কথায় তিনি ভয়ানক রাগান্বিত হইলেন। বলিলেন “আমি এমন কোন অন্যায় কার্য্য করি নাই, যাহাতে আপনার সঙ্গে যাইব।”

 আমি হাসিয়া উঠিলাম। পরে বলিলাম, “আপনি যে কার্য্য করিয়াছেন, তাহাতে আপনাকে তিন বৎসর কারাদণ্ড ভোগ করিতে হইবে।”

 বিমলার পিতা বলিলেন, “আইন কানুন আমাদেরও জানা আছে। আমি অপর কোন বালিকাকে চুরি করি নাই, আমারই কন্যাকে আমার বাড়ীতে লইয়া যাইতেছিলাম।”

 আ। কাহারও অনুমতি লইয়াছিলেন?