পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম পরিচ্ছেদ।
১৭

এই ঘটে যে জল আছে, তাহাতেই প্রক্ষালনক্রিয়া সম্পন্ন হইবেক। রাজা কহিলেন, না না, এত ব্যস্ত হইতে হইবেক না; মধুর সম্ভাষণ দ্বারাই আতিথ্য করা হইয়াছে। তখন অনসূয়া কহিলেন, মহাশয়! তবে এই শীতল সপ্তপর্ণ বেদীতে উপবেশন করিয়া শ্রান্তি দুর করুন। রাজা কহিলেন, তোমরাও জলসেচন দ্বারা অতিশয় ক্লান্ত হইয়াছ, কিঞ্চিৎ কাল বিশ্রাম কর। প্রিয়ংবদা কহিলেন, সখি শকুন্তলে! অতিথির অনুরোধ রক্ষা করা উচিত; এস আমরাও বসি। অনন্তর সকলে উপবেশন করিলেন।

 এই রূপে সকলে উপবিষ্ট হইলে, শকুন্তলা মনে মনে কহিতে লাগিলেন, কেন এই অপরিচিত ব্যক্তিকে নয়নগোচর করিয়া, আমার মনে তপোবনবিরুদ্ধ ভাবের উদয় হইতেছে? এই বলিয়া তিনি, তাঁহার নাম ধাম জাতি ব্যবসায়াদির বিষয় সবিশেষ অবগত হইবার নিমিত্ত, নিতান্ত উৎসুকা হইলেন। রাজা তাপসকন্যাদিগের প্রতিদৃষ্টিপাত করিয়া কহিলেন, তোমাদের সমান রূপ, সমান বয়স, সমান ব্যবসায়; সেই নিমিত্ত তোমাদের সৌহৃদ্য অতি রমণীয় হইয়াছে। প্রিয়ংবদা রাজার অগোচরে অনসূয়াকে কহিলেন, সখি! এ ব্যক্তি কে? দেখেছ, কেমন সৌম্যমূর্ত্তি, কেমন গম্ভীরাকৃতি, কেমন প্রভাবশালী। একান্ত অপরিচিত হইয়াও, মধুর আলাপ দ্বারা চিরপরিচিত সুহৃদের ন্যায় প্রতীতি জন্মইতেছেন। অনসূয়া কহিলেন,