পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।
২৭

গলিত পত্র সকল অনবরত পতিত হওয়াতে, অত্যন্ত কটু ও কষায় হইয়া উঠে। পিপাসা পাইলে, সেই বিরস বারি পান করিতে হয়। আহারের সময় নিয়মিত নাই; প্রায় প্রতিদিন অনিয়ত সময়েই আহার করিতে হয়। আহারসামগ্রীর মধ্যে শূল্য মাংসই অধিকাংশ; তাহাও প্রত্যহ প্রকৃতরূপ পাক করা হয় না। আর, প্রাতঃকাল অবধি মধ্যাহ্ন পর্য্যন্ত অশ্বপৃষ্ঠে পরিভ্রমণ করিয়া, সর্ব্ব শরীর বেদনায় এরূপ অভিভূত হইয়া থাকে যে, রাত্রিতেও সুখে নিদ্রা যাইতে পারি না। রাত্রিশেষে নিদ্রার আবেশ হয়; কিন্তু ব্যাধগণের বনগমনকোলাহলে অতি প্রত্যুষেই নিদ্রা ভঙ্গ হইয়া যায়। ত্বরায় যে এই সকল ক্লেশের অবসান হইবেক, তাহার ও সম্ভাবনা দেখিতেছি না। সে দিবস, আমরা পশ্চাৎ পড়িলে, রাজা, একাকী এক মৃগের অনুসরণক্রমে তপোবনে প্রবিষ্ট হইয়া, আমাদের দুর্ভাগ্যক্রমে শকুন্তলানাম্নী এক তাপসকন্যা নিরীক্ষণ করিয়াছেন। তাহাকে দেখিয়া অবধি, নগরগমনের কথা আর মুখে আনেন না। এই ভাবিতে ভাবিতেই, রাত্রি প্রভাত হইয়া গেল, এক বারও চক্ষু মুদি নাই।

 মাধব্য এই সমস্ত চিন্তা করিতেছেন, এমন সময়ে দেখিতে পাইলেন, রাজা মৃগয়ার বেশধারণপূর্ব্বক, তৎকালোচিত সহচরগণে পরিবেষ্টিত হইয়া, সেই দিকে আসিতেছেন। তখন তিনি