পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৮
শকুন্তলা।

হয়, বোধ করি, অনতিপরিস্ফুট রূপে জন্মান্তরীণ স্থির সৌহৃদ্য তাহার স্মৃতিপথে আরূঢ় হয়।

 রাজা মনে মনে এই বিতর্ক করিতেছেন, এমন সময়ে কঞ্চুকী আসিয়া কৃতাঞ্জলিপুটে নিবেদন করিল, মহারাজ! ধর্ম্মারণ্যবাসী তপস্বীরা, মহর্ষি কণ্বের সন্দেশ লইয়া, আসিয়াছেন, কি আজ্ঞা হয়। রাজা, তপস্বিশব্দ শ্রবণমাত্র, অতিমাত্র আদর প্রদর্শনপূর্ব্বক কহিলেন, শীঘ্র উপাধ্যায় সোমরতকে বল, অভ্যাগত তপস্বীদিগকে, বেদবিধি অনুসারে সৎকার করিয়া, অবিলম্বে আমার নিকটে লইয়া আইসেন; আমিও ইত্যবকাশে তপস্বিদর্শনযোগ্য প্রদেশে গিয়া রীতিমত অবস্থিতি করিতেছি।

 এই আদেশ প্রদান পূর্ব্বক কঞ্চুকীকে বিদায় করিয়া, রাজা অগ্নিগৃহে গিয়া অবস্থিতি করিলেন এবং কহিতে লাগিলেন, ভগবান্ কণ্ব কি নিমিত্ত আমার নিকট ঋষি প্রেরণ করিলেন? কি তাঁহাদের তপস্যার বিঘ্ন ঘটিয়াছে, কি কোনও দুরাত্মা তাঁহাদের উপর কোনও প্রকার অত্যাচার করিয়াছে? কিছুই নির্ণয় করিতে না পারিয়া, আমার মন অত্যন্ত আকুল হইতেছে। পার্শ্ববর্ত্তিনী পরিচারিকা কহিল, মহারাজ! আমার বোধ হইতেছে, ধর্ম্মারণ্যবাসী ঋষিরা মহারাজের অধিকারে নির্বিঘ্নে ও নিরাকুল চিত্তে, তপস্যার অনুষ্ঠান করিতেছেন; এই হেতু, প্রীত হইয়া, মহারাজকে ধন্যবাদ দিতে ও আশীর্বাদ করিতে আসিয়াছেন।