পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/২০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

खप्रकूद्रांथों খাওয়াবার জায়োজনও করবেন না, চাবুক-হাতে তাড়া করেও বেড়াবেন না। কারণ সে মার্জিত রুচিবিরুদ্ধ জীচরণ। সুতরাং সেদিকে নির্ভয় হতে পারেন। জহুরাধা বলিল, আমি তার কথা ছেড়ে দিলুম, কিন্তু আপনি নিজে দেখবেন কথা দিন । এই আমার মিনতি । বিজয় কহিল, কথা দিতেই ইচ্ছে করে, কিঙ্ক, আমার স্বভাবও আলাদা, অভ্যাসও আলাদা । আপনার আগ্রহ স্মরণ করে মাঝে মাঝে দেখবার চেষ্টা করব, কিন্তু যতটা আপনি চান তা পেরে উঠব মনে হয় না। কিন্তু আমার খাওয়া শেষ হ’লো, এখন যাই । যাবার উদ্যোগ করি গে। বলিয়া সে উঠিয়া পড়িল, কহিল, রইল কুমার আপনার কাছে, ওকে ছাড়বার দিন এলে দেবেন বিনোদকে দিয়ে কলকাতায় পাঠিয়ে। প্রয়োজন হয় আসঙ্কোচে সন্তোষকেও সঙ্গে দেবেন । প্রথমে এসে যে ব্যবহার করেচি ঠিক সেই আমার প্রকৃতি নয়। এ ভরসা আর একবার দিয়ে চললুম--আমার বাড়িতে কুমারের চেয়ে বেশী অনাদর সন্তোষের ঘটবে না । - বাড়ির সম্মুখে ঘোড়ার গাড়ি দাড়াইয়া, জিনিস-পত্র বোঝাই দেওয়া হইয়াছে ; বিজয় উঠতে যাইতেছে, কুমার বলিল, বাবা, মালীম ডাকচেন একবার। সদর দরজার পাশে দাড়াইয়া অঙ্গুরাধা কহিল, প্ৰণাম করব বলে ডেকে পাঠালুম, আবার কবে যে করতে পারব জানিনে। বলিয়া গলায় আঁচল দিয়া দূর হইতে প্ৰণাম কহিল। উঠিয়া দাড়াইয়া কুমারকে কোলের কাছে টানিয়া লইয়া বলিল, ঠাকুরমাকে ভাবতে বারণ করবেন। যে-ক'ট দিন ছেলেটা আমার কাছে রইল অযত্ন হবে না । বিজয় হাসিয়া বলিল, বিশ্বাস করা কঠিন । কঠিন কার কাছে ? আপনার কাছেও নাকি ? বলিয়া সেও হাসিতে গিয়া দু'জনের চোখা-চোথি হইল ; বিজয় স্পষ্ট দেখিতে পাইল তাহার চোখের পাতা দুটি জলে ভিজা । মুখ নামাইয়া বলিল, কুমারকে নিয়ে গিয়ে কিন্তু কষ্ট দেবেন না যেন। আর বলতে পাব না বলেই বার বার করে বলে রাখচি । আপনাদের বাড়ির কথা মনে হলে ওকে পাঠাতে আমার ইচ্ছে হয় না । না-ই বা পাঠালেন। প্রত্যুত্তরে সে শুধু একটা নিশ্বাস চাপিয়া চুপ করিয়া রহিল। বিজয় বলিল, যাবার পূৰ্ব্বে আপনার প্রতিশ্রুতির কথাটা আর একবার স্বরণ করিয়ে দিয়ে যাই । কথা দিয়েচেন কখনো কিছু প্রয়োজন হলে চিঠি লিখে আমাকে জানাবেন। $2}