পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/২৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিলাসী ৰাক্ষর নাই, ঘরের মধ্যে শুধু তার সন্ত-বিধবা স্ত্রী, আর আমি । তার স্ত্রী ত শোকের আবেগে দাপ-দাপি করিয়া এমন কাও করিয়া তুলিলেন যে, ভয় হইল তাহারও প্রাণটা বুঝি বাহির হইয়া যায় বা । কাদিয়া কাদিয়া বার বার আমাকে প্রশ্ন করিতে লাগিলেন, তিনি স্বেচ্ছায় যখন সহমরণে যাইতে চাহিতেছেন, তখন সরকারের কি ? র্তায় যে আর তিলাৰ্ধ বাচিতে সাধ নাই, এ কি তাহারা বুঝিবে না ? তাহাদের ঘরে কি স্ত্রী নাই ? তাহারা কি পাষাণ ? আর এই রাত্রেই গ্রামের পাচজনে যদি নদীর তীরের কোন একটা জঙ্গলের মধ্যে তার সহমরণের যোগাড় করিয়া দেয় ত পুলিশের লোক জানিবে কি করিয়া ? এমন কত কি ! কিন্তু আমার ত আর বসিয়া বসিয়া র্তার কারা শুনিলেই চলে না। পাড়ায় খবর দেওয়া চাই—অনেক জিনিস যোগাড় করা চাই। কিন্তু আমার বাহিরে যাইবার প্রস্তাব শুনিয়াই তিনি প্রকৃতিস্থ হইয়া উঠিলেন। চোখ মুছিয়া বলিলেন, ভাই, যা হবার সে ত হয়েচে, আর বাইরে গিয়ে কি হবে ? রাতটা কাটুক না । 今 বলিলাম, অনেক কাজ, না গেলেই যে নয় । তিনি বলিলেন, হোক কাজ, তুমি বসে। বলিলাম, বসলে চলবে না, একবার খবর দিতেই হবে, বলিয়া পা বাড়াইবামাত্রই তিনি চীংকার করিয়া উঠিলেন, ওরে বাপ রে ! আমি একলা থাকতে পারব না। কাজেই আবার বসিয়া পড়িতে হইল। কারণ তখন বুঝিলাম, যে-স্বামী জ্যাস্ত থাকিতে তিনি নিৰ্ভয়ে পচিশ বৎসর একাকী ঘর করিয়াছিলেন, তার মৃত্যুটা যদি বা সহে, তার মৃতদেহটা এই অন্ধকার রাত্রে পাঁচ মিনিটের জন্যও সহিবে না। বুক যদি কিছুতে ফাটে ত সে এই মৃত স্বামীর কাছে একলা থাকিলে । কিন্তু দুঃখটা তাহার তুচ্ছ করিয়া দেখানও আমার উদ্বেগু নহে। কিংবা তাহ খাটি নয় এ-কথা বলাও আমার অভিপ্রায় নহে। কিংবা একজনের ব্যবহারেই তাহার চূড়ান্ত মীমাংসা হইয়া গেল তাহাও নহে। কিন্তু এমন আরও অনেক ঘটনা জানি, যাহার নাম উল্লেখ না করিয়াও আমি এই কথা বলিতে চাই যে, শুধু কর্তব্য-জানের জোরে অথবা বহুকাল ধরিয়া একসঙ্গে ঘর-করার অধিকারেই এই ভয়টাকে কোন মেয়েমানুষই অতিক্রম করিতে পারে না। ইহা আর একটা শক্তি, যাহা বহু স্বামী-স্ত্রী একশ বৎসর একত্রে ঘর-করার পরেও হয়ত তাহার কোন সন্ধান *ांच्च मां । কিন্তু সহসা সেই শক্তির পরিচয় যখন কোন নর-নারীর কাছে পাওয়া যায়, তখন সমাজের জালালতে আসামী করিয়া তাহাদের ও দেওয়া আৰপ্তক যদি হয় তহোক, Εξ ο