পাতা:শেষের কবিতা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

 ‘বইয়ে বেরোয় নি।’

 ‘তবে পেলে কী করে?’

 ‘একটি ছেলে ছিল, সে আমার বাবাকে গুরু ব'লে ভক্তি করত, বাবা দিয়েছিলেন তাকে তার জ্ঞানের খাদ্য। এ দিকে তার হৃদয়টিও ছিল তাপস। সময় পেলেই সে যেত রবি ঠাকুরের কাছে, তাঁর খাতা থেকে মুষ্টিভিক্ষা করে আনত।’

 ‘আর নিয়ে এসে তোমার পায়ে দিত।’

 ‘সে সাহস তার ছিল না। কোথাও রেখে দিত, যদি আমার দৃষ্টিতে পড়ে, যদি আমি তুলে নিই।’

 ‘তাকে দয়া করেছ?’

 ‘করবার অবকাশ হল না। মনে মনে প্রার্থনা করি— ঈশ্বর যেন তাকে দয়া করেন।’

 ‘যে কবিতাটি আজ তুমি পড়লে, বেশ বুঝতে পারছি এটা সেই হতভাগারই মনের কথা।’

 ‘হাঁ, তারই কথা বৈকি।’

 ‘তবে তোমার কেন আজ এটা মনে পড়ল।’

 ‘কেমন করে বলব? ওই কবিতাটির সঙ্গে আর-এক টুকরো কবিতা ছিল, সেটাও আজ আমার কেন মনে পড়ছে ঠিক বলতে পারি নে—

সুন্দর, তুমি চক্ষু ভরিয়া
এনেছ অশ্রুজল।
এনেছ তোমার বক্ষে ধরিয়া
দুঃসহ হোমানল।

১২১