পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্ত হঠাৎ মুখে কথা যোগাইল না, তারপরে বলিলাম, কমললতা, তোমার মিছে এ পথে আসা। একদিন নাম ছিল তোমার উষা, আজো সেই উষাই আছে-একটুও বদলাতে পারো নি ! কেন বলে তা ? তুমি বলে ত কেন বললে আমাকে টাকা গুণে নিতে ? গুণে নিতে পারি। ব’লে কি সত্যি মনে করো ? যারা ভাবে একরকম, বলে অন্যরকম, তাদের বলে ভণ্ড। যাবার আগে বড়গোসাইজীকে আমি নালিশ জানিয়ে যাবে আখড়ার খাতা থেকে তোমার নামটা যেন তিনি কেটে দেন। তুমি বোষ্টমদলের কলঙ্ক । সে চুপ করিয়া রহিল। আমিও ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া বলিলাম, আজ সকালে আমার যাবার ইচ্ছে নেই। নেই ? তাহলে আর একটু ঘুমোও । উঠলে আমাকে খবর দিও -কেমন ? কিন্তু, এখন তুমি করবে কি ? আমার কােজ আছে। ফুল তুলতে যাবো । এই অন্ধকারে ? ভয় করবে না ? না, ভয় কিসের ? ভোরের পূজোর ফুল আমিই তুলে আনি ৷ নইলে ওদের বড় কষ্ট হয়। ওদের মানে অন্যান্য বৈষ্ণবীদের। এই দুটো দিন। এখানে থাকিয়া লক্ষ্য করিতেছিলাম যে সকলের আড়ালে থাকিয় মঠের সমস্ত গুরুভারই কমললতা একাকী বহন করে। তাহার কর্তৃত্ব সকল ব্যবস্থায়, সকলের পরেই ; কিন্তু স্নেহে, সৌজন্যে ও সৰ্ব্বোপরি সবিনয় কৰ্ম্মকুশলতায় এই কর্তৃত্ব এমন সহজ শৃঙ্খলায় প্রবহমান যে কোথাও ঈর্ষা, বিদ্বেষের অতটুকু আবর্জনাও জমিতে পায় না। এই আশ্রমলক্ষ্মীটি আজ উৎকণ্ঠ-ব্যাকুলতায় যাই যাই করিতেছে। এ যে ܘ