পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্ত ( e বলেন শুধু লক্ষ্মী। আমি বলি, ওগো, হাগো। আজকাল বলচেন নতুনগোঁসাই বলে ডাকতে। বলেন, তবু স্বস্তি পাবো ! পদ্মা হঠাৎ হাততালি দিয়া উঠিল-আমি বুঝেচি। কমললতা তাহাকে ধমকে দিল—পোড়ারমুখীব ভারি বুদ্ধি! কি বুঝেছিস বলত ? নিশ্চয় বুঝেচি। বলবো ? বলতে হবে না, যা । বলিয়াই সে সস্নেহে রাজলক্ষ্মীর একটা হাত ধরিয়া কহিল, কিন্তু কথায় কথায় বেলা বাড়চে ভাই, রোদরে মুখখানি শুকিয়ে উঠেচে। খেয়ে কিছু আসে নি জানি-চালো, হাত-পা ধুয়ে ঠাকুর প্রণাম করবে, তারপরে সবাই মিলে তঁার প্রসাদ পাবো। তুমিও এসে গোঁসাই।-বলিয়া সে তাহাকে মন্দিরের দিকে টানিয়া লইয়া গেল। এইবার মনে মনে প্ৰমাদ গণিলাম। কারণ, এখন আসিবে প্ৰসাদ গ্রহণের আহবান। খাওয়া-ছোয়ার বিষয়টা রাজলক্ষ্মীব জীবনে এমন করিয়াই গাথা যে এ সম্বন্ধে সত্যাসত্যের প্রশ্নই অবৈধ । এ শুধু বিশ্বাস নয়-এ তাহার স্বভাব। এ ছাড়া সে বঁাচে না। জীবনের এই একান্ত প্ৰয়োজনের সহজ ও সক্রিয় সজীবতা কতদিন কত সঙ্কট হইতে তাহাকে রক্ষা করিয়াছে সে-কথা কাহারো জানিবার উপায় নাই। নিজে সে বলিবে না-জানিয়াও লাভ নাই। আমি শুধু জানি, যে রাজলক্ষ্মীকে একদিন না চাহিয়াই দৈবাৎ পাইয়াছি, আজ সে আমার সকল পাওয়ার বড়ো ; কিন্তু সে কথা এখন থাক । তাহার যতী-কিছু কঠোরতা সে কেবল নিজেকে লইয়া, অথচ অপরের প্রতি জুলুম ছিল না। বরঞ্চ হাসিয়া বলিত, কাজ কি বাপু অতো কষ্ট করার। এ-কালে অতো বাছতে গেলে মানুষের প্রাণ