পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Style শ্ৰীকান্ত রাজলক্ষ্মী নির্বােক-মুখে আমার প্রতি চাহিয়াছিল, অকস্মাৎ সর্বাঙ্গে তাহার কঁটা দিয়া উঠিল, বলিলাম, ও কি ও ? না, কিছু না । তবে শিউবে উঠলে কেন ? রাজলক্ষ্মী বলিল, মুখে মুখে যে-ছবি তুমি আকলে তাব অৰ্দ্ধেক সত্যি হ’লেও বোধ হয়। আমি ভয়ে মবে যাই । কিন্তু আমার মতো এমন অকৰ্ম্ম লোক নিয়েই বা তুমি কববে কি ? বাজলক্ষ্মী হাসি চাপিয়া বলিল, কববো আব্ব কি ! ভগবানকে অভিসম্পাত কববো। আর চিরকাল জ্বলে-পুড়ে মববো। এজন্মে। আর ত কিছু চোখে দেখি নে । এর চেয়ে ব্যবঞ্চ আমাকে মুবারিপুব আখড়ায় পাঠিয়ে দাও না কেন ? তাদেরই বা তুমি কি উপকার কববে ? তাদেব ফুল তুলে দেবো। ঠাকুবেৰ প্ৰসাদ পেয়ে যতদিন বেঁচে থাকবে, তারপবে তারা দেবে আমাকে সেই বকুলতলায় সমাধি। ছেলেমানুষ পদ্মা কোন সন্ধ্যায় দিয়ে যাবে প্ৰদীপ জেলে, কখনো বা তার ভুল হবে-সন্ধ্যায় আলো জ্বলবে না। ভোরের ফুল তুলে তারি পাশ দিয়ে ফিরবে যখন কমললতা, কোনদিন বা দেবে সে একমুঠো মল্লিকা ফুল ছড়িয়ে ; কোনদিন বা দেবে কুন্দ। আর পরিচিত কেউ যদি কখনো আসে পথ ভুলে, তাকে দেখিয়ে বলবে, ঐখানে থাকে আমাদের নতুনগোঁসাই। ঐ যে একটু উঁচু-ঐ যেখানটায় শুকনো মল্লিকা কুঁদ-করবীর সঙ্গে মিশে ঝরা-বকুলে সব ছেয়ে আছে-ঐখানে । রাজলক্ষ্মীর চোখ জলে ভরিয়া আসিল, জিজ্ঞাসা করিল, আর সেই পরিচিত লোকটি কি করবে। তখন ? বলিলাম, সে আমি জানি নে। হয়ত অনেক টাকা খরচ করে মন্দির বানিয়ে দিয়ে যাবে