পাতা:শ্রীগৌর-উপদেশামৃত (প্রথম খণ্ড) -মধুসূদন দাস অধিকারী.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓ8 শ্ৰীগৌর উপদেশামুত । শিষ্যগণকে সঙ্গে লইয়া বাজারে উপস্থিত হইলেন। প্ৰভু সৰ্ব্বভূতহাদয়, তাহার দর্শনমাত্ৰ জীবের প্রাণমন তাহাতে আকৃষ্ট হইয়া থাকে। র্যাহার নামে পাষাণ গলে-প্রেমে ভুবন উন্মাদিত হয়, তাহার সাক্ষাৎ দর্শনে জীবের চিত্ত দ্রবীভূত হইবে, ইহাতে বিচিত্ৰত কি ! প্ৰভু নগরের নানা পসারে গমন করিয়া নানা দ্রব্য সংগ্ৰহ করিলেন। তন্তুবায়, তেলী, মালী, গোপ, তাম্বুলী, বণিক প্রভৃতি যিনিই সেই দেবদুল্লভ বস্তুকে দর্শন করিলেন, তিনিই মুগ্ধ হইয়া সন্ত্রমের সহিত উত্তম উত্তম দ্রব্য অৰ্পণ করিলেন। প্ৰভু আহলাদের সহিত তাহা গ্ৰহণ করিলেন। দ্রব্যের মূল্যস্বরূপ কাহাকেও কপৰ্দক মাত্রও প্ৰদান করিলেন না, কিন্তু তাহার বিনিময়ে এমন মহারাত্ন প্ৰদান করিলেন, যাহা সুরালোকেও সুদুল্লভ । “এই মত নবদ্বীপে যত নগরিয়া । সভার মন্দিরে প্রভু বুলেন ভ্ৰমিয়া ৷ সেই ভাগ্যে অদ্যাপিাহ নাগরিকগণ । পায় শ্রীচৈতন্যনিত্যানন্দের চরণ ॥” এইরূপ লীলারঙ্গে দয়াল শ্ৰীগৌরাঙ্গ নাগরিকগণকে ধন্য করিয়া এক সৰ্ব্বজ্ঞের গৃহে উপস্থিত হইলেন। প্রভুর অমানুষী তেজঃ প্রভাব দেখিয়া, সৰ্ব্বজ্ঞ বিনয়সম্রামে প্ৰণাম করিলেন। তখন প্ৰভু হাস্য প্ৰফুল্লমুখে বলিলেন,- “—তুমি সৰ্ব জানি ভাল শুনি । বল দেখি অন্য জন্মে কি আছিলাঙ আমি৷” চৈঃ ভাঃ ৷৷ ২৫ ৷৷ সর্বজ্ঞ শ্ৰীবালগোপাল মন্ত্রের উপাসক । তিনি শ্ৰীগোপালের ধ্যান করিয়া প্রভুর দিকে চাহিবামাত্ৰ দেখিলেন,— “-মোহন দ্বিভুজ দিগম্বরে। কটিতে কিঙ্কিণী, নবনীত দুই করে } নিজ ইষ্টমূৰ্ত্তি যাহা চিন্তে অনুক্ষণ । সর্বজ্ঞ দেখয়ে সেই সকল লক্ষণ ॥” সৰ্ব্বজ্ঞ পরম ভাগবস্তুক্ত, তাই প্ৰভু প্রথমতঃ তাহার ধ্যানের ধন অভীষ্ট মূৰ্ত্তিতে দর্শন দিয়া ধন্য করিলেন। কিন্তু ইচ্ছাময় শ্ৰীগৌর-ভগবানের মায়ায় বিমোহিত হইয়া আপনার সাধনার ধনকে নিকটে পাইয়াও চিনিতে পারিলেন না । সৰ্ব্বজ্ঞ এই অদ্ভুত ব্যাপার দেখিয়া পুনঃ পুনঃ ধ্যান করিতে লাগিলেন।