পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত তৃতীয় ভাগ.djvu/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“জ্ঞান বিচারের পথ কঠিন। পাৰ্ব্বতী গিরিরাজকে নানা ঈশ্বরীয় রূপে দেখা দিয়ে বললেন, “পিতা, যদি ব্ৰহ্মজ্ঞান চাও সাধু সঙ্গ কর।’ “ব্রহ্ম কি মুখে বলা যায় না। রামগীতায় আছে, কেবল তটস্থ লক্ষণের দ্বারা তাকে বলা যায়, যেমন গঙ্গার উপর ঘোষপল্লী। গঙ্গার তটের উপর আছে এই কথা বলে ঘোষপল্লীকে ব্যক্ত করা যায়। “নিরাকার ব্রহ্ম সাক্ষাৎকার হবে না কেন ? তবে বড় কঠিন । বিষয় বুদ্ধির লেশ থাকলে হবে না। ইন্দ্রিয়ের বিষয় যত আছে-রূপ, রস, গন্ধ, স্পর্শ, শব্দ সমস্ত ত্যাগ হ'লে,—মনের লয় হলে—তবে অনুভবে বোধে বোধ হয়। আর অস্তিমাত্র জানা যায়।” পণ্ডিত—অস্তিত্যোপলব্ধব্য ইত্যাদি । শ্রীরামকৃষ্ণ—তাকে পেতে গেলে একটা ভাব আশ্রয় করতে হয়, —বীরভাব, সখীভাব বা দাসীভাব আর সস্থান ভাব । মণি মল্লিক—তবে আঁট হবে। শ্রীরামকৃষ্ণ-আমি সখীভাবে অনেকদিন ছিলাম । বলতাম, ‘আমি আনন্দময়ী ব্ৰহ্মময়ীর দাসী,– ওগো দাসীরা আমায় তোমরা দাসী কর, আমি গরব করে চলে যাব, বলতে বলতে যে, আমি ব্ৰহ্মময়ীর দাসী! “কারু কারু সাধন না করেও ঈশ্বর লাভ হয়,—তাদের নিত্য সিদ্ধ বলে। যারা জপ-তপাদি সাধনা করে ঈশ্বর লাভ করেছে তাদের বলে সাধনসিদ্ধ। আবার কেউ কৃপাসিদ্ধ,— যেমন হাজার বছরের অন্ধকার ঘর, প্রদীপ নিয়ে গেলে একক্ষণে আলো হয়ে যায় ! - “আবার আছে হঠাৎসিদ্ধ,—যেমন গরীবের ছলে বড় মানুষের নজরে পড়ে গেছে। বাবু তাকে মেয়ে বিয়ে দিলে,—সেই সঙ্গে বাড়ি ঘর গাড়ি দাস দাসী সব হ’য়ে গেল । “আর আছে স্বপ্নসিদ্ধ—স্বপ্নে দর্শন হ’ল ।”