পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bo ভৌগোলিক বৃত্তাস্ত। [ ১ম ভাঃ ৭ম অঃ — শুড়ী—শোণ্ডিক বা শুড়ী জাতির উৎপত্তি সম্বন্ধে নানা মত প্রচলিত। ব্ৰহ্ম বৈবৰ্ত্ত পুরাণের মতে বৈং পুরুষ ও তীবর কন্যার যোগে শুড়ীর উৎপত্তি । * পরশুরাম সংহিতার মতে কৈবৰ্ত্ত পিতা গাণিক মাতার যোগে ইহাদের উদ্ভব হয়।+ গুণ্ডা বা সুরা প্রস্তত ও বিক্রয়ই ইহাদের ব্যবসায় । বৈদিক যুগে যখন সোম মুরা পবিত্র বস্তু মধ্যে পরিগণিত ছিল, তখন তাড়ী জাতি অনাদৃত ছিল না, পরে কাল ক্রমে নীচ ব্যবসায়ী বলিয়া নীচ শ্রেণীর মধ্যে পরিগণিত হইয়াছে । মদ্য ব্যবসাসী শুড়ীর সংস্রবে গেলে, মদের প্রলোভনে পড়িতে হয়, এই জন্য হিন্দু সমাজের এই সতর্কত। হস্তীপদতলে প্রাণত্যাগ করিবে, তথাপি শুণ্ডিকালয়ে যাইবে না, ; ইতি বাক্যের উৎপত্তি এই জন্যই হইয়াছিল। শুড়ীগণ প্রায়শঃ সাহ উপাধি ধারণ করে ; এই জন্য যাহারা নিজ ব্যবসায় পরিত্যাগ করিয়াছে, তাহাদিগকে বৈশ্ব-সাহ! জাতি হইতে পরিচয় করা কঠিন হইয়া দাড়াইয়াছে। কিন্তু তাহারা যে বৈশ্ব সাহ জাতি হইতে পৃথকৃ, তাহারা নিজেই মুদ্রিত পুস্তকাদি প্রচার করতঃ তাহা স্পষ্টাক্ষরে ব্যক্ত করিতেছে। s সাহা বা সাহু—পরশুরাম সংহিতায় “গান্ধিক শাঙ্খিক শ্চৈব কাংসক মণিকারক, সুবর্ণজীবিকশ্চৈব পঞ্চৈতে বণিজস্থতাঃ ;” বলিয়া যে পঞ্চবণিকের উল্লেখ আছে, শ্ৰীযুক্ত ধৰ্ম্মানন্দ মহাভারতী মহাশয় “সিদ্ধান্ত সমুদ্র ৬ষ্ঠ খণ্ডে এবং শ্ৰীযুক্ত কৃষ্ণনাথ ঘোষ মহাশয় “কুলপ্রতিভা" গ্রন্থের তৃতীয় খণ্ডে, বহুতর অকাট্য প্রমাণ সহযোগে সাহাজাতিকে সেই পঞ্চ বণিকের অন্তর্গত মণিবণিক বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন। কুলপ্রতিভায় লিখিত হইয়াছে যে, মণি বণিকের পরবর্তীকালে শস্যাদি বিক্রয় ব্যবসায়ে বৃত হওয়ায় খন্ধবণিক বলিয়া খ্যাত হয়। সুতরাং ইহারা বৈশ্ববর্ণ সস্তৃত। প্রায় দ্বাদশবর্ষ যাবৎ ঢাকার সাহাগণ “স্বজাতি হিতসাধন সমিতি” প্রতিষ্ঠা করতঃ আপনাদিগকে বৈশুবর্ণ বলিয়া নিৰ্দ্ধারিত করিয়াছেন। সাহ উপাধিটা প্রকৃত পক্ষে বৈশুদের উপাধি ।

  • “বৈশ্ব তীবর কন্যায়াং সদ্যঃ শুওঁী বভূবহ।"–ব্রহ্মবৈবৰ্ত্ত পুরাণ।

+ “ততো গাণিক কন্যায়াং কৈবৰ্ত্তাদেব শৌণ্ডিকঃ।" # "হস্তিন পীড্যমানোপি ন গচ্ছেৎ শৌণ্ডিকালয়ং।"