পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধৰ্ম্ম ও শিক্ষাদি। ] ঐহট্টের ইতিবৃত্ত । ৯৩ রূপ, খেদ, দূতীসংবাদ, অভিসার বা চলন এবং মিলন, এই পৰ্য্যায়ক্রমে গীত হয় । শ্ৰীহট্টে কবির গান ও ঘাটুর নাচ এক সময় অতি প্রচলিত ছিল। বালকগণ বালিকা বেশে নৃত্যসহকারে ঘাটুগান গাইত। মাম, মাথুর ইত্যাদি ভেদে এই গান গাইতে হয় । এই সকল সঙ্গীত শ্ৰীহট্টের কবিগণ রচনা করিতেন । পূৰ্ব্বে “ভাষা পদ্ম পুরাণ” সঙ্গীত যোগে শ্রাবণ মাসে পঠিত হইত, এ প্রথাও প্রায় উঠিয়া গিয়াছে। কবি ষষ্টীবর এবং নারায়ণ দেবের পদ্ম পুরাণই অনেক স্থানে পঠিত হইত। এই উভয় কবিই শ্ৰীহট্টবাসী। নারায়ণ দেবকে অনেকেই ময়মনসিংহলাসী বলিয়া মনে করিতেন, কিন্তু তিনি শ্ৰীহট্টবাসী বলিয়া প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে । * শ্ৰীহট্টে অন্যান্য দেবদেবী পূজায়, পশ্চিম বঙ্গের সহিত প্রভেদ দৃষ্ট হয় না। বারব্ৰতাদিতেও বড় বিশেষত্ব নাই। জন্মাহের ষষ্ঠ দিবসে বঙ্গপূজা, অবিবাহিতা বালিকাদের”মাঘব্রত এবং রমণীদের স্বৰ্য্যব্রত বিশেষ উল্লেখ যোগ্য । মাঘব্রতে সমস্ত মাঘ মাস ভরিয়া অবিবাহিতা বালিকাদিগকে ভোরে উঠিয়া স্নানান্তে ব্রতের নির্দিষ্ট বেদিক সন্মুখে বসিয়া কথা বলিতে হয়। বেদীর সম্মুখে জলপূর্ণ দুইটা গৰ্ত্ত থাকে ও অভিভাবিকাগণ তণ্ডুল, হরিদ্রা, ইষ্টক চুর্ণ এবং আবির দ্বারা প্রত্যহ বেদীও ব্রতস্থান চিত্রিত করিয়া দেন। পনরদিন পরে “উদয় পূজা ।” তৎকালে সমস্ত প্রাঙ্গন ভরিয়া চিত্র অঙ্কিত হয় । ব্ৰত সমাপ্ত দিন “দেউল" বিসর্জন করিতে হয় । ব্রতের দিন নির্দেশার্থ এক একটি মৃগয় গোলক তুলসী বেদীর নিয়ে রক্ষিত হয়, তাহাই দেউল । উত্তম স্বামী, ধন জন, বস্ত্ৰালঙ্কার ইত্যাদি লাভ করা এই ৰতের উদ্দেশু। শ্ৰীহট্টে স্ত্রীলোকদের মধ্যে স্বৰ্য্যত্রতও বিশেষ প্রচলিত, ইহ৷ মাঘ মাসের কোন এক রবিবারে, অভূক্তাবস্থায় দণ্ডায়মান থাকিয়া করিতে হয়। কদলী বৃক্ষ গাদাফুলে মণ্ডিত করিয়া প্রাঙ্গনে প্রোধিত করা হয়। তাছার সম্মুখে