পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>\9● ভৌগোলিক বৃত্তাস্ত। [ ১ম ভাঃ ৯ম অঃ — পাহাড়টি যেন সম্মুখে নত হইয়া —“ঝুকিয়া” রহিয়াছে। তাহার উপর হইতে জল রাশি শূন্ত দিয়া সলফে পড়িতেছে। যেখানে জলরাশি পতিত হইতেছে, তাহার চতুর্দিকে উচ্চ পাহাড় শ্রেণী, মধ্যদেশ একটি গুহা বিশেষ । দৈর্ঘ্যে পোয়৷ মাইলের অধিক হইবে না। ইহার মধ্যে কতকটা স্থান ব্যাপী এক বৃহৎ কুণ্ড—জল ভাগ প্রায় ৫০০০ বর্গ ফিট হইবে । ইহারই নাম মাধবকুণ্ড । ইহার মধ্যদেশ অতি গভীর। সাহসী লোক কেহ কেহ সাতার কাটিয়া ধারাতলে গমন করে ; কিন্তু শীতল জলে সাতার দিয়া কুণ্ড পার হইতে গেলে ক্লান্ত হইতে হয়। ক্ষুদ্র ধারাতলে, শূন্তে—পৰ্ব্বতগাত্র হইতে বহির্গত হইয়া একটি প্রস্তর আছে। ‘ছাতিজলে’ সেই প্রস্তরের উপর দাড়ান যায়। কিন্তু সেই ক্ষুদ্র ধারাটির জলপতনবেগই মস্তক অধিকক্ষণ ধারণ করিতে পারে না ; বৃহৎ ধারাতলে যাওয়া দুঃসাহসিকতা ও অসম্ভব। ইহার এক পাশ্বে একটি ক্ষুদ্র গহবর রহিয়াছে, সেই গহবরটিকে সাধারণ লোকে “কাব” বলে। ( কেব, Cave বলিলেই শুদ্ধ হইত। ) পাহাড়ের একদিক যেন মানুষে বহু যত্নে খুদিয়া রাখিয়াছে,–যেন পাথরের একটি একচালা ঘর। বৃষ্টির সময় প্রায় দুই শত লোক ইহার নীচে প্রবেশ করিলেও সমাবেশ হইতে পারে। যাত্রীগণ স্নানাদি করিয়া, পাহাড় হইতে বহির্গত হইয়া, পশ্চিম দিকে গেীরনগরে, মাধববাজার নামক স্থানে বারুণী মেলায় আসিয়া জলযোগ করে। মাধবমেলা দিন মাত্র স্থায়ী। এস্থানে প্রায় দশ হাজার লোকের সমাগম হয় ও নানাবিধ দ্রব্যাদি ক্রয় বিক্রয় হইয়া থাকে। মাধব যাত্ৰীগণের মধ্যে নিয়শ্রেণীর লোকের সংখ্যাই অধিক দৃষ্ট হয়। শিবলিঙ্গ তীর্থ মাধব বা অন্ত তীর্থের ন্যায় খ্যাতনামা না হইলেও, স্থানীয় লোকে পবিত্র বলিয়া ভক্তি করে ও সোমবার নন্দাদি শিবলিঙ্গ তীর্থ। তিথিতে, বিশেষতঃ চৈত্র শুক্ল প্রতিপদ যোগে তথায় গমন করিয়া থাকে। ইহা মনুষ্যকৃত নহে। প্রাকৃতিক দৃশু হিসাবে, ইহা একটি বিশেষ দর্শনীয় স্থান। ইহাও আদম আইল পাহাড়ে অবস্থিত ; বড়লিখা ষ্টেশন হইতে ইহা অধিক দুর নহে। ছোট লিখার ভদ্রপল্লী কাব ।