পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩২ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত তৃতীয় ভাগ-দ্বিতীয় খণ্ড “পঞ্চপাদঃ কথং সিংহঃ ঘম্বিঃ স্যাৎ কেন ভাস্করঃ নৃপতিঃ কস্যতুলোসে দীয়তামেক মুক্তরম্।" শুনিয়া শ্যামনন্দ বলিলেনঃ– উত্তর রাক্যঞ্চ মঘোনঃ ৬ সভায় শ্যামানন্দের জয় জয়কার পড়িল, রাজা প্রভূত পুরস্কার প্রদানে প্রাচীন পণ্ডিতকে প্রসন্ন-চিত্তে বিদায় করিলেন। “রুক্লিশীহরণ নাটক” প্রণেতা তত্ৰত টোলের অধ্যাপক শ্রীযুক্ত তারক চন্দ্র কৃতিরত্ন তদ্বংশ বৰ্ত্তমান আছেন। পঞ্চখণ্ডের অনিপণ্ডিত বা পণ্ডিত পাড়ার পরাশর গোত্রে শ্রীচৈতন্য-পার্ষদ শ্রীবাস পণ্ডিত প্রভৃতির জন্ম হয় বলিয়া কথিত আছে। শ্রীবাসের পিতার নাম জলধর পণ্ডিত, শ্ৰীবাস যখন ষোল বৎসরের বালক, তখন সন্ত্রীক জলধর নবদ্বীপে গমন করিয়াছিলেন। শ্রীবাসের জ্যেষ্ঠ সহোদর নলিন পণ্ডিতের একমাত্র কন্যার নাম নারায়ণী; শ্রীবাসের কনিষ্ট শ্রীরাম পণ্ডিত ও শ্রীকান্ত পণ্ডিতের কথা বৈষ্ণব গ্রন্থাদিতে আছে।৭৪র্থ ভাগে আমরা শ্ৰীবাসের প্রসঙ্গ উত্থাপিত করিব। সুপাতলা ও নয়াগ্রামের কৃষ্ণাত্রেয় গোত্রীয়গণ ত্রিপুরাধিপতির যজ্ঞেস কৃষ্ণাত্রেয় গোত্রীয় শ্ৰীপতি আচার্যের আগমন হয়, পরবর্তী কালে এই বংশে উমাকান্ত চক্রবত্তীর জন্ম হইয়াছিল, তাহার পুত্রের নাম রূপেশ্বর, তৎপুত্র মুকুন্দ রাম বিশারদ, তাহার পুত্রের নাম মহেশ্বর ন্যায়ালঙ্কার। মহেশ্বর হইতে এ বংশ বিশেষ গৌরবান্বিত হইয়াছে। মহেশ্বরের পুত্রের নাম শ্রীরাম বিশারদ, তাহার পুত্র বিশ্বরূপ এবং তৎপুত্র রমাকান্তের, রামনারায়ণ নামে এক পুত্র হয়। ইহার পুত্রের নাম কৃষ্ণচরণ, তাহার পুত্র শম্ভুনাথ। শম্ভুনাথের পুত্র তারা নাথ ও তৎপুত্র শ্রীনাথ ভট্টাচাৰ্য্য জীবিত আছেন। শম্ভুনাথের পুত্র তারা নাথ ও তৎপুত্র শ্রীনাথ ভট্টাচাৰ্য্য জীবিত আছেন । মহেশ্বর ন্যায়ালঙ্কার— শ্রীহট্টের গৌরব স্বরূপ মহেশ্বর এক বিখ্যাত সংস্কৃত গ্রন্থকার। তিনি সুপ্রসিদ্ধ নৈয়ায়িক জগদীশের ছাত্র ছিলেন। তিনি কাব্য প্রকাশের “ভাবাৰ্থ চিন্তামনি” নামক অপূৰ্ব্ব টীকা প্রণয়ন পূৰ্ব্বক অক্ষয় কীৰ্ত্তি স্থাপন করিয়াছেন। এই টীকা কলিকাতাস্থ সংস্কৃত কলেজ এবং বঙ্গের অন্যান্য সংস্কৃত বিদ্যালয় সমূহে অধীত হইয়া থাকে। তৎপ্রণীত “স্মৃতি ব্যবস্থা" ও দায় ভাগের টীকা সংস্কৃত গ্রন্থ-ভাণ্ডারের অমূল্য রত্ন বিশেষ। স্মাৰ্ত্ত রঘুনন্দনের অষ্টাবিংশতি স্মৃতিতত্ত্বের প্রতি কটাক্ষ করিয়া, তাহারই ন্যায় তিনি অষ্টাবিংশতি "প্রদীপ” প্রণয়ন করেন। ডয়শ্লোকার্থঃ-সিংহ পঞ্চপাদ বিশিষ্ট কিরূপে হয়? ভ্ৰম্বি ভাঙ্গর হন কি কারণে? এই রাজা কাহারতুল্য একটি বাক্যে উত্তর দিন । উত্তরে-“মঘোনঃ।” যথা-(১) মঘয়া উনঃ মঘোনঃ। নয় পাদ নক্ষত্রে এক রাশি হয়, মঘা, পূৰ্ব্বফাল্গুনী, ও উত্তর ফাল্গুনীর, একপাদে সিংহরাশি; এখন মঘা ছাড়িয়া সিংহ পঞ্চপাদ হয়। (২) মঘাভ্যামৃনঃ-গ্রন্থি শব্দ হইতে 'ঘ' এবং ম’ অক্ষর ত্যাগ করিলে "রবি" অবশিষ্ট থাকে; রবি অর্থে ভাস্কর। (৩) মঘোনঃ শব্দে ইন্দ্রেয় বুঝায়, অর্থাৎ এই নৃপতি ইন্দ্রতুল্য। ৭. নাম যথা-শ্ৰীবাসপণ্ডিত আর শ্রীরামপণ্ডিত । শ্রীপণ্ডিত আর শ্রীকান্তপণ্ডিত -প্রেম বিলাল । শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগ ১ম খণ্ড ৪র্থ অধ্যায় দেখ। শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৭/৮ম অধ্যায়ে টীকাধ্যায়ে ইহার কাল নিরূপণাদি অপর বিবরণ দ্রষ্টব্য। .