সপ্তম অধ্যায় চৌয়ালিশ ও ইটার সিদ্ধ বংশ দত্তবংশ চেয়ালিশের দত্ত বংশীয়গণ সাতগায়ের বৈদ্য জাতীয় দত্তের এক শাখা। ইহাদের চৌধুরী পদবী । এই বংশীয়গণ ঘড়ুয়া, চাড়িয়া, নলদড়িয়া ও খিদুর গ্রামবাসী। এই বংশীয় মহেশ্বর দত্ত বাণিয়াচঙ্গের জমিদারের অধীনে “কুরশা” পরগণার দফতরের অধিকারী হইয়া, সেইদেশে গমন করিয়াছিলেন। ইহাদের বংশকথা ও তত্ৰত্য গুপ্তদের কথা বিশেষ ভাবে সংগৃহীত হইতে পারে নাই বলিয়া অতি সংক্ষেপে ২/৪টি কথা কথিত হইল। ত্রিপুর গুপ্ত চেয়ালিশ পরগণায় ৫২টি গ্রাম আছে, তন্মধ্যে অলহা, মুকুটপুর, নওয়া পাড়া নামক স্থানে ত্রিপুর গুপ্ত বংশীয়ের বাস। বৈদ্য জাতীয় এই গুপ্ত বংশে ভরত রায় চৌয়ালিশের চৌধুরাই প্রাপ্ত হন; তাহার নামে তত্ৰত্য ১নং তালুক বন্দোবস্ত হয়। এই বংশীয় রঘুনাথ গুপ্ত চৌধুরী আটগাওতে স্বগীয় কালী স্থাপন পূৰ্ব্বক তথায় বাস করেন। আটগায়ের গুপ্তবংশীয়গণ তাঁহারই বংশোদ্ভব। কাউ গুপ্ত এই বংশীয়গণ রাঢ়দেশ হইতে আগমন পূৰ্ব্বক চেয়ালিশের মাসকান্দি গ্রামে অবস্থিতি করেন। অল্পদিন মধ্যেই তাহারা বদ্ধিষ্ণু হইয়া উঠেন ও তত্ৰত্য স্বগীয় রাজরাজ্যেশ্বরীকে ৫২/হাল ভূমি দেবত্র দান করেন। এই বংশে শ্যামরায় ও মাধব রায় চৌধুরীর নামে শায়েস্তা নগরে তালুক আছে, তাহারা তথাকার মিরাশদার। এই বংশীয়গণ চৌয়ালিশের মাসকান্দি, সন কাপন, দলিয়া ও আন্দা গ্রামে বাস করিতেছেন। শিবানন্দ সেনের বংশ কথা সেন শিবানন্দ চৌয়ালিশের আদাপাশার সেনগণ, এক মহাবংশ সন্থত। এই বংশের পরিচয় স্থলে এই মাত্র বলিলেই যথেষ্ঠ হইবে যে, যিনি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর প্রধান পার্ষদ ছিলেন, যাহার পুত্র কবি কর্ণপুর শ্রীচৈতন্য লীলার প্রধান গ্রন্থ রচয়িতা; এই বংশীয়গণ সেই গৌরবান্বিত সেন-বংশের সুযোগ্য সস্তান। 拳 শ্রীচৈতন্য চরিতামৃতে লিখিত হইয়াছেঃ-“সেন শিবানন্দ প্রভুর ভৃত্য অন্তরঙ্গ।” সেন শিবানন্দ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর অতি প্রিয় ভক্ত ছিলেন, ইহার জন্মস্থান কুলীন গ্রাম (বৰ্দ্ধমান জিলায়)। শিবানন্দ ধনী ব্যক্তি ছিলেন; শ্ৰীমহাপ্রভুর সন্ন্যাস গ্রহণের পর ইনি গৌড়ীর শত শত ভক্ত সঙ্গে লইয়া নীলাচলে শ্ৰীগৌরাঙ্গ সম্মিলনে যাইতেন। তাহাদের অনেকের পাথেয় দিতেন, সবারই পারাপারের পয়সা দিতেন, চরিতামৃতে একথা লিখিত আছে। ১."শিবানন্দ করে সব ঘাটি সমাধান । সবাকে পালন করে, দিয়া বাসাস্থান।”-শ্রীচৈতন্য চরিতামৃত।
