পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/২৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৫০ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত তৃতীয় ভাগ-তৃতীয় খণ্ড বিপ্রহরির মহোৎসবে শ্ৰীনীবাসাচার্য্যের পৌত্রে আগমন ও পঞ্চগদী কথা বিপ্রহরির বহু অর্থব্যয়ে এক মহোৎসব আরম্ভ করেন, এতাদৃশ মহোৎসবের কথা এদেশে শুনা যায় নাই; এই মহোৎসবে কেবল শ্রীহট্টের নহে, পূৰ্ব্ব ও পশ্চিম বঙ্গের খ্যাত নামা বহুতর বৈষ্ণব ভক্ত নিমন্ত্রিত হইয়া আগমন করেন। শ্রীনিবাসাচার্য্যের নাম বৈষ্ণব জগতে বিখ্যাত । শ্ৰীমহাপ্রভুর পরে ইনি বৈষ্ণব সমাজের নেতা ছিলেন; ইহার জনৈক পৌত্র এই মহোৎসবে আগমন করিয়াছিলেন। শ্রীহট্টের, বৈষ্ণব সমাজে তৎকালে বঞ্চিত ঘোষ, ঠাকুরাণী, বৈষ্ণব রায় ও পাগল শঙ্কর প্রভৃতি সিদ্ধ মহাত্মাগণ ছিলেন।১১ বৈষ্ণব সমাজে কোন মহোৎসবে প্রসাদ ভোজন কালে গুণানুসারে অগ্র পশ্চাৎ বসিবার রীতি আছে, শ্রীনিবাস-পৌত্র এই মহোৎসবের কর্ণধার রূপেই গুণানুসারে সকলকে বসাইয়া ছিলেন; উৎসব সুন্দররাপে সম্পন্ন হইয়াছিল। বলা আবশ্যক যে বৈষ্ণব সমাজে ভক্তিই শ্রেষ্ঠ গুণ মধ্যে গণ্য হয় । এই সময়ে রাজা বিপ্রহরি একটা প্রস্তাব করেন। শ্রীহট্টের ভবিষ্যতে যে সকল বৈষ্ণবোৎসব হইবে, শ্রীহট্টীয় সিদ্ধ বংশীয়দিগকে সেই সব মহোৎসবে কি রীতি অনুসারে কাহাকে কোন স্থানে আসন দেওয়া হইবে, তাহার শৃঙ্খলা করিয়া দিতে আচাৰ্য্য-পৌত্রকে অনুরোধ করেন। তখন নিম্নাদর্শে আচাৰ্য্য-পৌত্রের ইচ্ছামতে সৰ্ব্ব-বৈষ্ণব সম্মতে একখানা তাম্রপত্রে সিদ্ধবংশীয়গণের আসন স্থান নিরূপিত হয়ঃ আসন আসন ঠাকুর পাগল বাণী শঙ্কর | উত্তর | পশ্চিম –H পূৰ্ব্ব 来源 米 আসন দক্ষিণ আসন 来 事 ঠাকুর শ্ৰীনিবাস বাণী আসন আচাৰ্য্য বৈষ্ণব রায় এই চিহ্নিত স্থানে কোন আসন-স্থান নির্দিষ্ট ছিল না, পরে আদা পাশার সেন বংশীয় অধিকারীদের জন্য এই স্থান নিরূপিত হয়। (পূৰ্ব্বে তাহা উক্ত হইয়াছে।) বৰ্ত্তমানে মহোৎসবাদিতে এই তাম্র পত্রের নির্দেশানুসারেই সিদ্ধ বংশীয় বর্গের বসিবার আসন প্রদত্ত হইয়া থাকে। শ্রীনিবাসাচার্য্যে বংশ এদেশে নাই, শুধু মান্যার্থে তাহাদের আসনের স্থান কল্পিত হইয়াছে। ১১. “শ্রীহট্ট দেশেতে আর্য্য সিদ্ধা চারিজন । বঞ্চিৎ, বাণী, বৈষ্ণব রায়, শঙ্কর এই চারি। ধৰ্ম্ম আচরণে কৈলা দেশে অধিকারী।” -বঞ্চিত চরিত্র গ্রন্থ।