পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৪৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাম কৃষ্ণ হরি, এ ভব সায়রে, অকুলে না গেলু বোর কন্টক বনে, শিমলির ফুল চাইতে, পন্থ হারি ঘোর বনে ফিরে যেন আন্ধা৷ মানুষ জনম পাইয়া হেলে গোয়াইনু। গুরুদত্ত নামধন তাহে না চিনিনু॥ কাহ গঙ্গারাম ঘোষে জনম বিফল । আপন কুমতি দোষে ভরা হৈল হল॥৩৬ (S) "ওহে নাথ কৃপার সাগর হরি। তব কৃপা হলে এ ভব তরিয়া । দেশেতে ফিরিতে পারি শুধু৷ রাধাকৃষ্ণ নাম দড়াইয়া না লইলু, ভবের সম্পদ পাইয়া । ওপারে পড়িয়া ডাকিছে তোমারে, দিন গেল মোর গইয়া॥ নাম নিরঞ্জন, পতিত পাবন, এ বেদ পুরাণে কয়। (পড়ি) এ ভব সংসারে ডাকিহে তোমারে, খণ্ডাহ শমন ভয়৷ জনমে জীবনে রাম না গাইনু আপন করম দোষে । অধম বঞ্চিত ঘোষে॥" (5) “গুণনিধি পতিত পাবন তোমার নাম । মুই পাপী ডুবিলুরে, পন্থ কি করিলু রে, সে কুলে না রইলু, পস্থ চিনাও মোরে; কোলে না তুলিনু রে, মুখে না লইলু রামনাম৷ বাস করয়ে মোর ঘরে । আমি অধম ডাকি তোরে॥ ঠেকিলু দুকুল মাখায়। চরণে ঠেলিয়া কর পার। বলয়ে বঞ্চিত ঘোষে । দিন গেলমিছা পরবাসে৷ যাহার কৃপায় রত্নাকর ঋষি হইতে পারেন; মুখ গোবিন্দ দাস কবিত্ব লাভে গ্রন্থকার হইতে কথিত । বালকের এই করুণ গীতিকা তাহার মৰ্ম্ম বেদনারই ধ্বনি; আহার নিদ্ৰা ত্যাগ করিয়া অদ্ভুত বালক এইরূপ কাদিতে লাগিলেন। শেষোক্ত গীতের ভাবে বোধ হয় যে, তিনি একবারে বঞ্চিত হন নাই, যে সময়েও ৩৬. গঙ্গারাম কেন বঞ্চিত নামে খ্যাত হন, তাহা জানা যায় না। এই গীতটি তাহার প্রথম রচিত ও প্রিয় ছিল; ইহার প্রথমেই “বঞ্চিত” শব্দ থাকায় কি তিনি “বঞ্চিত” নামে খ্যাত হন বলা যায় না।