পাতা:সংকলন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কৌতুকহাস্যের মাত্রা

 সেদিনকার ডায়ারিতে কৌতুকহাস্য সম্বন্ধে আমাদের আলোচনা পাঠ করিয়া শ্রীমতী দাপ্তি লিখিয়া পাঠাইয়াছেন, ‘একদিন প্রাতঃকালে স্রোতস্বিনীতে ও আমাতে মিলিয়া হাসিয়াছিলাম। ধন্য সেই প্রাতঃকাল এবং ধন্য দুই সখীর হাস্য। জগৎসৃষ্টি অবধি এমন চাপল্য অনেক রমণীই প্রকাশ করিয়াছে, এবং ইতিহাসে তাহার ফলাফল ভালো-মন্দ নানা আকারে স্থায়ী হইয়াছে। নারীর হাসি অকারণ হইতে পারে, কিন্তু তাহা অনেক মন্দাক্রান্তা, উপেন্দ্রবজ্র,, এমন কি, শার্দূলবিক্রীড়িতচ্ছন্দ, অনেক ত্রিপদী, চতুষ্পদী এবং চতুর্দশপদীর আদিকারণ হইয়াছে, এইরূপ শুনা যায়। রমণী তরলস্বভাববশত অনর্থক হাসে, মাঝের হইতে তাহা দেখিয়া অনেক পুরুষ অনর্থক কাঁদে, অনেক পুরুষ ছন্দ মিলাইতে বসে, অনেক পুরুষ গলায় দড়ি দিয়া মরে—আবার এইবার দেখিলাম, নারীর হাস্যে প্রবীন ফিলজফরের বিকন হই নির্ণর অপেক্ষ’ পূবেক্ত: বন্ধ বনগাঁ ও লম্বভাব অনর্থক অকে পুরুষ অনর্থক কঁদে, অনেক পুরুষ “গাষ পড়ি নিয়া মরে—আবার রাস্তা প্রণীত ফিলজফরের মাথায় নবীন ফিলজফি বিকশিত হইয়া উঠে। কিন্তু সত্য কথা বলিতেছি, তত্ত্ব-নির্ণয় অপেক্ষা পূর্বোক্ত তিন প্রকারের অবস্থাটা আমরা পছন্দ করি।’

 এই বলিয়া সেদিন আমরা হাস্য সম্বন্ধে যে সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছিলাম শ্রীমতী দীপ্তি তাহাকে যুক্তিহীন অপ্রামাণিক বলিয়া প্রমাণ কবিয়াছেন।

 আমার কথা এই যে, আমাদের সেদিনকার তত্ত্বের মধ্যে যে যুক্তির প্রাবল্য ছিল না, সেজন্য শ্রীমতী দীপ্তির রাগ করা উচিত হয় না। কাবণ, নারীহাস্যে পৃথিবীতে যত প্রকার অনর্থপাত করে,